বসবাস করেন ঢাকায়। নাম এলিনা ইয়াসমিন। শীতের ছুটিতে তার ৬ মাসের বাচ্চাসহ পরিবারের ৬ সদস্য একসঙ্গে বেড়াতে যান রাজবাড়ীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে। বেড়ানো শেষে গেলো শুক্রবার রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকায় ফিরছিলেন তারা। ট্রেনটি যখন গোপীবাগ এলাকায়, অর্থাৎ আর দু-তিন মিনিটের মধ্যেই ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে। ঠিক এ সময়ই আগুন ধরে যায় ট্রেনে। সেই আগুনে পরিবারের ৫ জন প্রাণে বাঁচলেও এখনো নিখোঁজ এলিনা ইয়াসমিন। আহত সদস্যরা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সরেজমিনে বার্ন ইনস্টিটিউটের সামনে নিখোঁজ এলিনা ইয়াসমিনের ভাই ইমতিয়াজ ণমাধ্যমে এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, আমার বোনকে হারিয়ে ফেলেছি। বোনের বাচ্চাটার বয়স ৬ মাস। দুধের শিশু। বাচ্চাটা হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তার মায়ের জন্য কাঁদছে। এদিকে আশপাশের অসংখ্য মানুষ বাসায় এসে ভিড় করছে। কিন্তু তার মাকে তো কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না।
ট্রেনে আগুনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ইমতিয়াজ বলেন, ট্রেনে আগুন দেখতে পেয়ে যাত্রীরা নামার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেন। কেউ জানালার গ্লাস ভাঙছে নামার জন্য। কেউ লাফিয়ে পড়ছে। এমন সময় আমার বোন এলিনা নিজের কোলে থাকা ছয় মাসের শিশুকে আরেক বোন ডেইজির কোলে তুলে দিয়ে ট্রেন থেকে পরিবারের বাকি সদস্যদের নামতে সহযোগিতা করে। তারা নামতে পারলেও শেষে এলিনা ইয়াসমিন নিজেই নিখোঁজ হয়ে যায়। দুর্ঘটনার স্থান ও পুরো এলাকা তন্নতন্ন করে খুঁজেও তাকে এখনো পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমার পরিবারের ছয় সদস্যের মধ্যে বোনের দুই ছেলে রেহান ও দেহান, দুলাভাই ইকবাল খান, বোন ডেইজি আক্তার, আরেক স্বজন আরফান। আমার বোন এলিনা আক্তারও তাদের সঙ্গে ছিল।
কান্না থামিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে ইমতিয়াজ আরও বলেন, আমার পরিবারের লোকজন ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তারা এখন সুস্থ আছে। তাদের সবার চিকিৎসা চলছে বার্ন ইউনিটে।
প্রসঙ্গত, গেলো শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ আরও ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
এএম/