ব্যাংকের সুশাসন ফেরাতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি অ্যাকশন প্ল্যান করা হয়েছে। বললেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ব্যাংকার্স সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মেজবাউল হক। ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে একটি অ্যাকশন প্ল্যান করা হয়েছে। সেখানে খেলাপি ঋণ কমানো এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আসব। এছাড়াও ব্যাংকের ঋণ খেলাপিদের ধরতে সব ধরণের পদক্ষেপ নিতে ব্যাংকের কার্যনির্বাহীদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আমরা মুদ্রানীতি ঘোষণা করার সময় ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছিলাম। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মামলা কমাতে এডিআরের ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে ব্যাংক নির্বাহীদের। এতে মামলার সংখ্যা কমে আসবে। তবে এটাও তাদের সতর্ক করা হয়েছে যাতে কোনো গ্রাহক এই এডিআরের সুবিধা নিয়ে শুধু শুধু সময় ক্ষেপন না করতে পারে। এছাড়া আমরা কিছুদিন আগে একটি প্রজ্ঞাপন দিয়েছিলাম ব্যাংক ঋণ গ্রহীতাদের আঙ্গুলের ছাপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো সমস্যা হবে কিনা সে বিষয়েও তাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, আমরা মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই সব ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছি। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের সুদের হার আরও বাড়তে পারে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো যাতে কোনো ধরণের সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়ে তাদের আগে থেকেই পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
মেজবাউল হক বলেন, ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ডলার সোয়াপে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ডলার আছে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য ডলার রেখে টাকা নিতে পারবে। আবার সময় শেষে টাকা ফেরত দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে। অনেক সময় ব্যাংকের কাছে শর্তের অতিরিক্ত ডলার থাকে। সেক্ষেত্রে শর্তের কারণে সেই ডলার বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। আবার পরবর্তীতে তাদের এলসি পেমেন্টের সময় ব্যাংকগুলো ডলার পাচ্ছে না। এজন্যই বাংলাদেশ ব্যাংক কারেন্সি সোয়াপের দিকে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশেই এই প্রাকটিস আছে। আমাদের এর আগে এ ধরণের সমস্যা তৈরি হয়নি। তাই আমাদের প্রাকটিস ছিলো না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা গত ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর সংস্কারের জন্য প্রমোট কারেক্টিভ অ্যাকশন (পিসিএ) ঘোষণা করেছি। সেখানে সংস্কারের ক্ষেত্রে কিভাবে ব্যাংকগুলোর অবস্থান নির্নয় করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণানা দেওয়া আছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকের হিসাব ধরে আগামী বছরের মার্চ নাগাদ ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হবে।