জাল নোট তৈরি ও সরবরাহের অভিযোগে জিসান হোসেন রিফাত (১৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এসময় তার কাছ থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের জাল নোট ও ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গেলো বৃহস্পতিবার রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে র্যাব-১০ এর সিপিসি-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার (এসপি) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল।
মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল জানান, অল্পসময়ে বেশি টাকা আয়ের লোভে উচ্চাভিলাষী জিসান ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে একটি চক্রের কাছ থেকে জাল নোট তৈরির প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তিনি নিজেই জাল নোট তৈরি করে বিভিন্নভাবে সরবরাহ করে আসছিলেন। এখন পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি টাকার জাল নোট বাজারে ছাড়েন এসময় তার কাছ থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের জাল নোট ও ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। জিসান।
জিসানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, নিজের তৈরি জাল টাকা সরবরাহের জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হন জিসান। একটি সংঘবদ্ধ চক্র টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে জাল টাকা তৈরির প্রযুক্তি আদান-প্রদান করতো। জাল টাকা বিক্রির পন্থা বলে দিতেন চক্রের সদস্যরা। মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে জাল নোট বিক্রি করা হতো। ফেসবুক গ্রুপে জাল টাকা বিক্রির পোস্ট দেয়া হতো। এরপর কেউ আগ্রহী হয়ে কমেন্ট করলে তাদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতেন চক্রের সদস্যরা।
পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল আরও বলেন, চক্রের সদস্যদের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার কদমতলী, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জাল নোট সরবরাহ করা হতো। জিসান প্রতি এক লাখ টাকার সমপরিমাণ মূল্যের জাল নোট ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। পরে চক্রটি মাছবাজার, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানান কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করতো।
উল্লেখ্য জিসান অধিক জনসমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপিয়ে মজুত করতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জাল নোট ছাপানোর সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয়ে ফেলতেন গ্রেপ্তার জিসান।
এএম/