পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ধানের নামেই চাল বাজারজাত নিশ্চিত করতে বস্তার ওপর ৬টি তথ্য লেখা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।
বস্তায় উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য এবং ধান বা চালের জাত উল্লেখ করার নির্দেশনা দিয়ে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সরকারি পরিপত্র জারি করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
নির্দেশনার কপি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, সকল বিভাগীয় কমিশনার, সকল জেলা প্রশাসক, সকল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সকল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।
জারি করা এ পরিপত্রে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলায় পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, বাজারে একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা অকস্মাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে ভোক্তাগণ ন্যায্যমূল্যে পছন্দমত জাতের ধান, চাল কিনতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থার উত্তরণের লক্ষ্যে চালের বাজার মূল্য সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে, ধানের নামেই যাতে চাল বাজারজাতকরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিংয়ের সুবিধার্থে ছয় নির্দেশনা দেয়া হয়।
এক. চালের উৎপাদনকারী মিলাররা গুদাম হতে বাণিজ্যিক কাজে চাল সরবরাহের প্রাক্কালে চালের বস্তার ওপর উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য এবং ধান/চালের জাত উল্লেখ করতে হবে।
ধানের জাতের নাম, প্রস্তুতকারক, ঠিকানা (উপজেলা ও জেলা), নিট ওজন, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্যের এই তথ্যগুলো ছক মোতাবেক লেখা থাকবে।
দুই. বস্তার ওপর উল্লিখিত তথ্যাদি কালিতে হাত দিয়ে লেখা যাবে না।
তিন. চাল উৎপাদনকারী সকল মিল মালিক (অটো/হাস্কিং) কর্তৃক সরবরাহকৃত সকল প্রকার চালের বস্তা/প্যাকেটের (৫০/২৫/১০/৫/২/১ কেজি ইত্যাদি) ওপর উল্লিখিত তথ্যাদি মুদ্রিত করতে হবে।
চার. কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মিল গেট দামের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান চাইলে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য উল্লেখ করতে পারবে।
পাঁচ. এ পরিপত্রের আলোকে সকল জেলা প্রশাসক/উপজেলা নির্বাহী অফিসার/আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক/জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক/ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। খাদ্য পরিদর্শকগণ পরিদর্শনকালে এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’ এর ধারা ৬ ও ধারা ৭ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
ছয়. আগামী ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ) তারিখ থেকে এ পরিপত্রের নির্দেশ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
এএম/