ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের দাবিতে দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে প্রতীকী লাশ নিয়ে মিছিল করছেন হানিফ বাংলাদেশি নামে এক ব্যক্তি। গেলো ১৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার জিরোপয়েন্টে শুরু হওয়া প্রতীকী লাশের মিছিল সারা দেশ ঘুরে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি যশোরের বেনাপোল সীমান্ত গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বিকেল তিনটায় পঞ্চগড় শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে অবস্থান নিয়ে সীমান্ত হত্যা ও দেশে বিদেশী আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করেন তিনি। এ সময় হানিফ বাংলাদেশির সঙ্গে আসা তিন যুবক প্রতীকী লাশ নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে সীমান্তে হত্যা বন্ধে প্রতিবাদ জানান।
হানিফ বাংলাদেশি বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুটি দেশ ভারত ও মিয়ানমার। এ দেশ দুটি সব সময় বাংলাদেশের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। মিয়ানমার ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে অত্যাচার করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এসব রোহিঙ্গা নিজেরা মানববেতর জীবনযাপন করছে, বাংলাদেশের নানা রকম সামাজিক সংকট সৃষ্টি করছে। গেলো ৫ ফেব্রুয়ারি দেশটির অভ্যন্তরে যুদ্ধের কারণে মর্টার শেল বাংলাদেশে এসে পড়ে বাংলাদেশিসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। ওই দেশটির ৩৩০ জন বিজিপি সহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশে অনুপ্রবেশে করেছে। তাদের বাংলাদেশ সরকার সম্মানের সাথে ফেরত পাঠিয়েছে। কিন্তু দুই বাংলাদেশি নিহতের ঘটনার দায় কে নেবে? অবশ্যই মিয়ানমার সরকারকে এই হত্যার দায় নিতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ সরকারকে এর দায় নিতে হবে।
ভারত সম্পর্কে তিনি বলেন, ভারত সবসময় সীমান্তে নিরীহ মানুষকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করছে। গেলো ২২ জানুয়ারী যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল ধান্যখোলা সীমান্তে বাংলাদেশের একজন বিজিবি সদস্যকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। গত ৪ মাসে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২১ জন বাংলাদেশী বিএসএফ এর গুলিতে নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের হিসেবে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশীকে বিএসএফ হত্যা করেছে আর বাহিনীটির গুলিতে আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ১৮৩ জন।
উল্লেখ্য, সমাবেশ শেষে সীমান্ত হত্যা ও বিদেশী অগ্রাসন বন্ধে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড় থেকে প্রতিকী লাশ নিয়ে একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের বকুলতলা এলাকায় পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। এসময়ে তিনি দেশবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে দেশের সচেতন মানুষদের এই কর্মসূচী অংশ গ্রহণ করার আহবান জানান।