নানা কারণে বিশ্বে ২৩ কোটির বেশি নারী যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। আর ২০১৬ সালের পর অর্থাৎ গত ৮ বছরে যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার নারীর সংখ্যা সারা বিশ্বে বেড়েছে ১৫ শতাংশ বা ৩ কোটি।
৮ মার্চ (শুক্রবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল ইউনিসেফের প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ এফজিএম (ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন) নামে পরিচিত। ক্লিটরিস (ভগাঙ্কুর) ও লেবিয়া মাইনরার আংশিক বা পূর্ণ অপসারণ এবং যোনিপথ সংকুচিত করতে সেলাই—এ প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
যৌনাঙ্গচ্ছেদের কারণে বড় ধরনের রক্তপাত বা সংক্রমণ হতে পারে। এ ছাড়া নারীর উর্বরতা সমস্যা, সন্তান জন্মদানে জটিলতা, মৃত সন্তান প্রসব ও যন্ত্রণাদায়ক শারীরিক সম্পর্কের মতো দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে পারে এফজিএম।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব দেশ নারী যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার বেশি হচ্ছে , সেসব দেশে নারী যৌনাঙ্গচ্ছেদের ঘটনা কমছে খুব ধীরে। নারী যৌনাঙ্গচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে বেশি আফ্রিকার দেশগুলোতে; সেখানে ১৪ কোটির বেশি নারী এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। এশিয়ায় ৮ কোটি ও মধ্যপ্রাচ্যে ৬ কোটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিয়েরা লিওনে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরী ও তরুণী যাঁরা যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার হয়ে থাকেন, তাঁদের সংখ্যা গত ৩০ বছরে ৯৫ শতাংশ থেকে কমে ৬১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ইথিওপিয়া, বুরকিনা ফাসো ও কেনিয়াতেও যৌনাঙ্গচ্ছেদের প্রবণতা বেশ খানিকটা কমার বিষয় লক্ষ করা গেছে।
তবে সোমালিয়ায় ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৯৯ শতাংশ, গিনির ৯৫ শতাংশ, জিবুতির ৯০ শতাংশ ও মালির ৮৯ শতাংশ যৌনাঙ্গচ্ছেদের শিকার হন।
ইউনিসেফ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষতিকর এ চর্চা দূর করতে অগ্রগতির বর্তমান স্তর ২৭ গুণ বৃদ্ধি করতে হবে।
এ বিষয়ে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রুসেল বলেন, যৌনাঙ্গচ্ছের কারণে নারীর শারীরিক ক্ষতি হচ্ছে, এছাড়া তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাওয়ায় পাশাপাশি জীবন হুমকির মুখে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘কম বয়সে আরও বেশিসংখ্যক নারীর অঙ্গচ্ছেদের শিকার হওয়ার ঘটনা, জা এক উদ্বেগজনক প্রবণতা। এমনকি অনেক কন্যাশিশু পাঁচ বছরের আগেই এমন অঙ্গচ্ছেদের শিকার হচ্ছে।’