ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে গেলো শুক্রবার ১৫ (মার্চ) নব্বই হাজার ফিলিস্তিনি মুসল্লি তারাবিহ নামাজ আদায় করেছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে প্রায় ৮০ হাজার মুসল্লি আল আকসা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে আল আকসায় প্রবেশ আরও কঠোর করেছে ইসরায়েল।
পবিত্র রমজান মাসে এশার নামাজের পর আদায় করা হয় তারাবি নামাজ। জেরুজালেমের ইসলামিক এনডাউমেন্টস বিভাগ জানিয়েছে, রমজানের ষষ্ঠ রাতে মুসল্লিরা নামাজে অংশ নিয়েছিলেন।
ফিলিস্তিনের সরকারী বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে আল-আকসা মসজিদে নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় জামাত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন যে, মসজিদের দিকে যাওয়ার গেটে ইসরায়েলি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল এবং বেশ কয়েকজন যুবককে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু কতজনকে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে সেই সংখ্যা জানানো হয়নি।
আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের জন্য বিশ্বের তৃতীয় পবিত্র স্থান। ইহুদিরা এলাকাটিকে টেম্পল মাউন্ট বলে দাবি করে। তাদের দাবি, এটি প্রাচীনকালে দুটি ইহুদি মন্দিরের স্থান ছিল।
১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম (যেখানে আল-আকসা অবস্থিত) দখল করে। এটি ১৯৮০ সালে পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক বিশ্ব এই অধিগ্রহণকে স্বীকৃতি দেয়নি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার ফিলিস্তিনি। আর আহত ৭৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার বাসিন্দারা প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে।
কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে। ইতোমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ত্রাণের জন্য হুড়োহুড়ি করছে।