পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের আলজেস শহরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে একটি ক্যাথলিক গির্জার স্থানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। শহরের নামে মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে আলজেস জামে মসজিদ।
মসজিদের সভাপতি এমরান হোসেন ভূইয়া বলেন, আলজেস এলাকায় কোনো মসজিদ না থাকার কারণে এখানে বসবাসরত মুসলিমদের ৮-১০ কিলোমিটার দূরে মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য যেতে হতো। তাই এই অঞ্চলে বসবাসকারী আমরা কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে একটি মসজিদ তৈরির ইচ্ছা পোষণ করি এবং তা বাস্তবায়ন করি। যার ফলশ্রুতিতে আজ আমরা এত সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায় করতে পারছি।
মসজিদ নির্মাণের গল্প বলতে গিয়ে মসজিদ কমিটির কোষাধাক্ষ নিউটন হক জানান, এটি খ্রিষ্ট ধর্মের ক্যাথলিক অনুসারীদের গির্জা ছিল এবং সেখানে তারা প্রার্থনা করতো। পরবর্তীতে এটি পরিচালনার অভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা গেলো ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে এই স্থানটি মসজিদে নির্মাণ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হই এবং সবার সহযোগিতায় এবং পরিশ্রমে এই নান্দনিক সৌন্দর্যের মসজিদ তৈরি করতে সক্ষম হই।
মসজিদ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ জুয়েল মোল্লাহ্ বলেন, আলজেস জামে মসজিদটি নির্মাণ আমাদের কমিউনিটির জন্য অত্যন্ত গৌরবের। পর্তুগালে প্রতিনিয়ত আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবস্থান দৃঢ় হচ্ছে এবং পর্তুগিজদের সঙ্গে সহাবস্থানে থেকে আমরা আমাদের বাংলাদেশকে এবং মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরতে পারছি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পরিচালনায় পর্তুগালের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ১৫-১৬ টির মতো মসজিদ রয়েছে। এই মসজিদগুলো শুধু নামাজ আদায় নয়, পর্তুগালে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পর্তুগালসহ আইবেরিয়ান পেনিনসুলায় (পর্তুগাল, জিব্রাল্টা, স্পেন এবং দক্ষিণ ফ্রান্স) ৭১১ থেকে ১৪৯২ সাল পর্যন্ত ৮০০ বছর বিভিন্ন ভাগে এই অঞ্চলে মুসলিম সাম্রাজ্যের শাসন ছিল। সেসময় এই অঞ্চলটি আল-আন্দালুজ হিসেবেও পরিচিত ছিল। পর্তুগাল এবং স্পেনের বিভিন্ন শহর এবং জাদুঘরে এখনো মুসলিম সাম্রাজ্যের স্মৃতিস্তম্ভ বিভিন্ন প্রত্নতত্ত্ব রয়েছে। ১৪৯২ সালে সর্বশেষ মুসলিম সর্বশেষ শাসক স্পেনের রানীর কাছে গ্রানাডা শহরে আত্মসমর্পণ করেন এরপর থেকে এ অঞ্চলটিতে খ্রিষ্ট ধর্মের আধিপত্য বৃদ্ধি পায়।