বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬১ রান করে। যেখানে বাংলাদেশি বাঁহাতি পেসার ফারিহা তৃষ্ণা হ্যাট্রিক তুলে নিয়েছেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তোলে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জয়ের ফলে ২-০ তে এগিয়ে থেকে সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া।
মিরপুরে ১৬২ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা ভালোই করেছিলেন দুই ওপেনার। চাপমুক্ত ব্যাট করে রান তুলতে থাকেন দিলারা আক্তার ও মুর্শিদা খাতুন। কিন্তু দলীয় ৩৪ রানের মাথায় ফেরেন মুর্শিদা। মেগান শাটের ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হয়ে ৮ রানে বিদায় নেন এই ব্যাটার।
মুর্শিদার সাথে যোগ দেন সোবহানা মুস্তারি। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনিও কট বিহাইন্ড হয়েছেন, বোলার অ্যাশলে গার্ডনারের বলে। ফিরেছেন মাত্র ৫ রানে। বাংলাদেশ উইকেট হারাতে থাকে পরপর। নিগার সুলতানা জ্যোতি ও ওপেনার দিলারাও টিকতে পারলেন না। আজ জ্যোতির ব্যাটে মাত্র ১ রান এসেছে। ফিরেছেন সোফি মলিনেক্সের শিকার হয়ে।
দলীয় ৪৮ রানে ফেরেন দিলারা। এই ব্যাটার ফিরেছেন ব্যক্তিগত ২৭ রানে। দলের এই পর্যায়ে স্বর্ণা আক্তার ও ফাহিমা খাতুন মিলে আবারও কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করেন। এই জুটি অবশ্য ৩০ রানের বেশি এগোয়নি। ফিরতে হয় ফাহিমাকে, ১৫ রানে। নতুন ব্যাটার শরিফা খাতুনও ফেরেন পরের ওভারে। এরপরের ওভারে গার্ডনারের শিকার হয়ে ফেরেন থিতু হওয়া স্বর্ণা। তিনি ১৭ বলে ২১ রানে ফিরেছেন।
পরের ব্যাটারদের কল্যাণে কেবল দলীয় শতকটুকু পেরিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রানে থামে দলের ইনিংস। রাবেয়া খান অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অ্যাশলে গার্ডনার ও এলিসে পেরি দুজনেই ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ফারিহা তৃষ্ণার ডেলিভারিতে ফোবি লিচফিল্ড ফিরে যান ব্যক্তিগত ২ রান করে। তবে এরপরে গ্রেস হ্যারিস ও জর্জিয়া ওয়্যারহাম মিলে গড়ে তোলেন জুটি। দলীয় শতক পূরণ করে এই জুটি ভাঙে। ওয়্যারহাম ব্যক্তিগত ফিফটি করে নাহিদা আক্তারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
হ্যারিসের অবশ্য ফিফটি করা হয়নি। এই ব্যাটার ফিরেছেন ৪৭ রান করে। উইকেটের পতন দ্রুত ঘটতে থাকে অজিদের। হ্যারিস ফেরার আগেই অ্যাশলে গার্ডনারের উইকেট তুলে নেন ফাহিমা খাতুন। অর্থাৎ দলীয় ১১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। তখন চলছিল ১৩তম ওভারের খেলা।
এই অবস্থায় তাহিলা ম্যাকগ্রা ও এলিসে পেরি মিলে আবারও রান তুলতে থাকেন। দলীয় ১৫৩ রানে ফেরেন তাহিলা। নাহিদা আক্তারের ডেলিভারিতে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে ১৯ রানে ফেরেন এই ব্যাটার। শেষ ওভারে অবশ্য অপেক্ষা করছিল চমক। যা তৃষ্ণার হাত ধরে আসে।
ইনিংসের ২০তম ওভারের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে পরপর ৩ টি উইকেট তুলে নেন তৃষ্ণা। অর্থাৎ হ্যাট্রিক অর্জন করেন তিনি। এর আগেও একবার হ্যাট্রিকের স্বাদ পেয়েছিলেন এই বোলার। ২০২২ সালে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে হ্যাট্রিক করেন তিনি। এবার সুযোগ হলো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রথম ও সবমিলিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে এই অর্জনে নাম লেখালেন তৃষ্ণা।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সংগ্রহ করেন ফারিহা তৃষ্ণা।