সুনামগঞ্জে মোবাইল ফোনে সম্পর্কের জেরে এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে এই ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে ভার্চুয়াল যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নজরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘২০ বছর ধরে আমি আমেরিকার একটি শহরে বসবাস করি। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পুরোনো বারুংকা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাহেরা আক্তারের (৩০) সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা, আইফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়। তার দ্বারা আমি মারাত্মকভাবে প্রতারিত হয়েছি। তার বিচার ও শাস্তির দাবি জানাই।’
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় তাহেরার সঙ্গে। মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর একপর্যায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আন্তরিকতা তৈরি হয়। এরই মধ্যে তাহেরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে থাকে আমার সঙ্গে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। আমি সরল মনে রাজি হই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইনকাম থেকে কষ্ট করে তাহেরার জন্য টাকা পাঠাই। সে আমার পাঠানো ১৫-২০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছে। তার দুই বোনের সরকারি চাকরি ও বিয়ের জন্য আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছে। আমি সরল চিন্তা থেকে ব্যাংক মারফত এবং বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে দফায় দফায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। এর বাইরেও তাহেরা আমাকে বিয়ের প্রলোভনে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মাসে মাসে হাতখরচের টাকাসহ আইফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়েছে আমার কাছ থেকে।’
প্রবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দেশে আসতে চাইলে তাহেরা বাধা দিত। সে চাকরি ছেড়ে উন্নত জীবনের জন্য আমেরিকায় আমার কাছে আসার ইচ্ছা জানায়। আমেরিকায় আসার জন্য সরকারি ছুটিতে আমার টাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে আইইএলটিএস করে। সে নিজের পেশাগত পরিচয় আড়াল করে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে একটি ও সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে আরেকটি পাসপোর্ট বানায়।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটা সময় পর্যন্ত সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু সে আমার সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালে একাধিক ছেলের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করে, যা প্রথমে আমি জানতাম না। পরে বিভিন্ন মারফতে ও তার আচরণে বিষয়টি বুঝতে পারি। আইইএলটিএস করার সময় তাহেরা একটি ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে লিপ্ত হয়। দু-এক মাস আগে তাহেরা গোপনে সেই ছেলেকে বিয়ে করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাহেরা আমাকে এই বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে নারী নির্যাতনের মামলা দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে।’