বিয়ে হয়েছে মাত্র ১৬ মাস। এরইমধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন স্বামী। তারপর স্ত্রীর মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করেন। দুই-তিন-চার –পাঁচ নয় দুই শতাধিক টুকরা করেন। এরপর এক সপ্তাহ ধরে ওই টুকরাগুলো প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে ফ্রিজে রেখে দেন।
নারকীয় তাণ্ডবের এখানেই শেষ নয়। এবার লাভ-লোকসানের উপায় খুঁজতে থাকেন তিনি। মোবাইলে গুগলে সার্চ করেন দুটি প্রশ্ন জানার জন্য। তা হলো-,স্ত্রী মারা গেলে স্বামী কী কী সুবিধা পেতে পারেন। আর দ্বিতীয়টি হলো-কেউ মরে যাওয়ার পর ভূত হয়ে ভয় দেখাতে আসে কিনা?
পরে বন্ধুর সাহায্যে স্ত্রীর মরদেহের টুকরাগুলো নদীতে ফেলে দিয়ে আসেন। একাজে সহায়তা করেন তারই এক বন্ধু। এরজন্য ওই বন্ধুকে ৫০ পাউন্ড অর্থ দিয়েছিলেন।
যুক্তরাজ্যে লোমহর্ষক এ এঘটনার জন্ম দিয়েছেন নিকোলাস মেটসন (২৮) নামের এক ব্যক্তি। শনিবার (৬ এপ্রিল) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদনে এ ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিকোলাস মেটসন (২৮) নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে স্ত্রী হলি ব্রামলিকে হত্যার কথা প্রথমদিকে অস্বীকার করলেও এক সপ্তাহ পর নিজের দোষ স্বীকার করেন। এর আগে অবশ্য তদন্ত কাজে তার বাসায় আসলে হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের সঙ্গে রসিকতা করেন। পুলিশকে মজা করে বলেন, তার স্ত্রী খাটের নিচে লুকিয়ে থাকতে পারে।
তবে এতকিছু করেও পার পায়নি ওই অভিযুক্ত স্বামী। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর ভিতাম নদীর পাশ দিয়ে হাঁটার সময় এক ব্যক্তি মরদেহ রাখা প্লাস্টিকের ব্যাগগুলো দেখতে পান। সেখানে একটি ব্যাগে হাত বেরিয়ে ছিল। পরে পুলিশকে খবর দিলে নদীতে নামানো হয় ডুবুরি। তারা ব্রামলির শরীরের ২২৪টি টুকরা উদ্ধার করেন। এ ছাড়া এখনও কিছু অংশ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ বোলছে স্ত্রীকে শোয়ার ঘরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন যুবক। তার পর বাথরুমে নিয়ে গিয়ে তার দেহ টুকরা টুকরা করা হয়। বাড়ি থেকে রক্তমাখা কাপড়, বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়েছে। দেহ পচার গন্ধ ঢাকতে ঘরে অ্যামোনিয়ার কড়া গন্ধ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানান,মরদেহটি এমনভাবে টুকরা টুকরা করা হয়েছে যে মুত্যুর কারণ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব ছিল।
স্বামীর বর্বরতায় নিহত ওই নারীর মা আদালতকে বলেন, তার মেয়ের মাত্র ১৬ মাস আগে বিয়ে হয়েছে। তার স্বামী একটা ‘দানব’ প্রকৃতির ছিলেন। নিহত ব্রামলিকে তার মায়ের কাছে অনেকদিন আসতে দিত না। তার মেয়ে অনেকটা বিচ্ছেদের পর্যায়ে ছিলেন। এমন সময়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
সনহতের পরিবারের অভিযোগ, এর আগে তরুণীর পোষ্য কুকুর এবং হ্যামস্টারগুলিকেও নৃশংস ভাবে খুন করেছেন ওই যুবক। শুক্রবার ব্রিটেনের আদালতে স্ত্রীকে খুনের কথা তিনি স্বীকার করে নেন। আদালত তার সাজা ঘোষণা স্থগিত রেখেছেন। অভিযুক্ত স্বামীর দাবি, জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।