তিন বাংলাদেশির মরদেহ ব্রুনাইয়ের হাসপাতাল রিপাস থেকে দেশে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে দুজনের মরদেহ গেলো দুই বছরের বেশি সময় ধরে ওই হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষিত ছিল। চিকিৎসার বিল বকেয়া থাকার কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মরদেহ ছাড়ছিল না।
গেলো বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুই ধাপে এই বাংলাদেশিদের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়।
ব্রুনাইয়ের বাংলাদেশ হাইকমিশন গণমাধ্যমে বলছে, তিন বাংলাদেশির মধ্যে শিপন (উপজেলা: গৌরনদী, জেলা: বরিশাল) এবং মোশারফ হোসেনের (উপজেলা: শিবপুর, জেলা: নরসিংদী) লাশ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত বরাদ্দের অর্থায়নে গত বুধবার দেশে পাঠানো হয়। এ ছাড়া সুমন খানের (ঝালকাঠি সদর) লাশ ব্রুনাইয়ের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি সদস্যদের থেকে সংগৃহীত অর্থের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার দেশে পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে জানা যায়, শিপন ও মোশারফের লাশ গত ২ বছরের বেশি সময় ধরে রিপাস হাসপাতালের মর্গে রক্ষিত ছিল। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী কোনো কর্মী প্রবাসে কর্মকালীন মৃত্যুবরণ করলে বা অসুস্থ অথবা আহত হলে যথাযথ ইন্স্যুরেন্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি কর্তৃক চিকিৎসাসহ প্রয়োজনে লাশ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে এক্ষেত্রে উপরোক্ত ব্যক্তিদের কেউই মৃত্যুবরণের সময় বৈধভাবে ব্রুনাইয়ে অবস্থান করছিলেন না। ফলে তাদের লাশ দেশে পাঠাতে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে শিপন মৃত্যুবরণের আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেখানে ১৮ হাজার ৪১১ ব্রুনাই ডলার (প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা) বিল বকেয়া হয়। লাশ পাঠানোর আগে এই অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা থাকায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
ব্রুনাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা রহমান সুমনা গণমাধ্যমে জানান, বাংলাদেশ সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণ নিশ্চিতকল্পে সর্বদায় বদ্ধপরিকর। হাইকমিশনার তিন বাংলাদেশির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি সকল প্রবাসী কর্মী ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম অনুযায়ী ইন্স্যুরেন্স ও অনুমোদিত ভিসা নিশ্চিতপূর্বক বৈধভাবে সম্মানের সঙ্গে প্রবাসে অবস্থান করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, হাইকমিশনারের প্রচেষ্টায় ব্রুনাই সরকার ওই অর্থ মওকুফ করে এবং বাংলাদেশ হাই কমিশনের চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত বরাদ্দের অর্থে লাশ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হয়।
এএম/