বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘স্মার্ট সুদহার’ চালুর পরে এক বছরও টিকল না। গেল অর্থবছরের শুরুতে চালু হওয়া ‘এসএমএআরটি’ পদ্ধতি ব্যর্থ হওয়ায় অবশেষে ১০ মাসের মাথায় বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ঋণের সুদের হার সম্পূর্ণভাবে বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া নীতি সুদহার দশমিক ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একাধিক সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতে ঋণের চাহিদা ও ঋণযোগ্য তহবিলের জোগান সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হবে। তবে ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি নির্দেশনা পরিপালন করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৯ শতাংশ। ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন দেয় আইএমএফ। যার অন্যতম শর্ত ছিল বেঁধে দেওয়া সুদহার থেকে বেরিয়ে আসা। ঋণের শর্ত পরিপালনের জন্য গত বছরের জুলাই থেকে সুদের হারের নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পদ্ধতি চালুর পর থেকে স্মার্ট রেটের সঙ্গে নির্ধারিত মার্জিন যোগ করে সর্বোচ্চ সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে।
এদিকে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করায় ব্যাংকের সুদহার বাড়বে। আর সুদহার বাড়লে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কমে যাবে কর্মসংস্থান। সার্বিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন সুদহারের সীমা ৯ শতাংশে বেঁধে রাখার পর গত অর্থবছর থেকে চালু হয়েছিল এই ‘স্মার্ট রেট’ পদ্ধতি। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তসহ নানামুখী চাপে পরে ‘এসএমএআরটি’ বা ‘স্মার্ট’ পদ্ধতি (সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) প্রত্যাহার করা হয়েছে। ব্যাংকঋণের সুদহার সম্পূর্ণ বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এএম/