শুক্তো হোক বা নিরামিষ চচ্চড়ি কিংবা পাতলা মাছের ঝোল- সজনে ডাঁটা না পড়লে রান্নার স্বাদটা ঠিক জমে না। তবে শুধু ডাঁটা নয়, সজনে গাছের পাতাও কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী। শাকের নামে নাক কুঁচকোলেও ইদানীং অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষই অনলাইনে অর্ডার দিয়ে যে মোরিঙ্গা পাউডার কিনে খান, তা আসলে সজনে পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে প্যাকেটজাত করা। প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালশিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি-১, বি-২, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ভরপুর মাত্রায় রয়েছে পাতায়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর সজনে পাতা কেবল রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে না, এর রয়েছে আরও অনেক গুণ।
সজনেপাতায় যে পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, তা মস্তিষ্কের স্নায়ুর বয়সজনিত অবক্ষয়কে লাগাম পরিয়ে স্মৃতিশক্তিকে সতেজ রাখতে সক্ষম।
ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিঙ্কের মতো খনিজ, প্রয়োজনীয় নানা রকম ভিটামিন, প্রোটিন রয়েছে সজনেপাতায়। তাই এক পাতার গুণেই শরীরের অনেক উপাদানের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
সজনেপাতায় রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং কোয়ারসেটিনের মতো উপাদান। এই সব উপাদান ফ্রি র্যাডিক্যাল, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
সজনেপাতা, ডাঁটা এবং ফুলে আইসোথিয়োকায়ানেট নামক একটি উপাদান রয়েছে। যা প্রদাহজনিত সমস্যা নির্মূল করতে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে সজনেপাতা। কারণ, এই পাতার মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায়। তাছাড়া এই পাতায় যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি যৌগ থাকায় তা সামগ্রিক ভাবে হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে।
সজনেপাতা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য এই পাতা নিঃসন্দেহে উপকারী।
সজনেপাতায় যে পরিমাণ ফাইবার রয়েছে, তা অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। যাদের হজমের বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই পাতা উপকারী।
কী ভাবে খাবেন?
সজনেপাতা ভেজে শাকভাজার মতো বানিয়ে খেতে পারেন, প্রথম পাতে ভাতের সঙ্গে খেতে মন্দ লাগে না। এছাড়া ডালেও সজনেপাতা দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। বাজারে সজনেপাতার গুঁড়ো কিনতে পাওয়া যায়। রোজ সকালে সেই গুঁড়ো গরম পানিতে মিশিয়ে চা বানিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। তবে সারা দিনে ১ চামচ সজনেপাতার গুঁড়ো খেলেই যথেষ্ট।
এসি//