বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারের বিরুদ্ধে ৬৪ জেলায় মামলা হবে।
শিল্পী সমিতি নির্বাচন নিয়ে চলমান পরিস্থিতিতে তার মানহানিকর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ডি এ তায়েব।
বুধবার(২২ মে) বিকেলে চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক সংকট নিয়ে এফডিসিতে মতবিনিময় সভায় বসে চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠনের সদস্যরা। সভাশেষে সন্ধ্যার দিকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ১৯ সংগঠনের প্রতিনিধি প্রযোজক এমডি ইকবাল এবং ডিএ তায়েব। এসময় নিপুণের বিষয়টি উঠে আসলে তার বিরুদ্ধে মামলা করার কথা বলেন।
বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। দেশে ফিরে ডিএ তায়েবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বিভিন্ন মিডিয়ার কাছে বলেছেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে উপস্থিত সাংবাদিকদের একজন অভিনেত্রী নিপুণের বিষয়ে শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির সহ-সভাপতি ডিএ তায়েবকে জিজ্ঞেস করলে জবাবে তিনি নিপুণের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগের কথা বলেন।
ডিএ তায়েব ওই সাংবাদিককে বলেন, “নিপুণকে সাবধান করে দেন, তার নামে ৬৪ জেলায় মামলা হচ্ছে। আমরা ফ্যানরা তার নামে মানহানির মামলা করতে প্রস্তুত। আমি মত দেয়ার সাথে সাথে মামলা করে দিবে। আমি মত না দিলেও তারা মামলা করে দিবে।”
ফ্যানরা কেন মামলা করবেন? বিষয়টি জানতে চাইলে ডি এ তায়েব বলেন, “কারণ নিপুণ আমার মানহানি করেছেন। যারা আমার ভক্ত, এবং আমার সংগঠন করেন, আমাকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করে; তারা নিজ নিজ এলাকায় মানহানির পর্যায়ে গেছে। তারা তাদের মানহানির কারণেই মামলা করবে। ৫০১ ধারায় সেই মামলা করা হবে। ক্লিয়ার?”
চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক সংকট নিয়ে বুধবার বিকেলে মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় হয়। এরমধ্যে শিল্পী কিংবা চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের মধ্যে পারস্পারিক বোঝাপড়া নিয়ে কথা হয়। সাধারণ মানুষের কাছে হাস্যরসে পরিণত হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয় ১৯ সংগঠনের সদস্যদের।
এর আগে, এফডিসি চত্ত্বরে অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারকে বয়কটের দাবিতে মিছিল করছেন সমিতির সদস্যরা। বুধবার (২২ মে) দুপুর ৩টা থেকে এফডিসি চত্বরে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়। এসময় সমিতির সদস্যরা নিপুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। নির্বাচনে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মনোয়ার হোসেন ডিপজল নির্বাচিত হন। ফলাফল শেষে সবার আগে নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আক্তারই ফুলের শুভেচ্ছা জানান।
এসময় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ডিপজলের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও তার কাছাকাছি ভোট পাওয়ায় মিডিয়ার কাছে বেশ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নিপুণ। নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও সম্পন্ন হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই।
নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেওয়ার ২৫ দিন পর নিপুণ আদালতে যান। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত কমিটি মিশা সওদাগর-মনোয়ার হোসেন ডিপজল প্যানেলের ফল স্থগিত চেয়ে রিট করেন।
আদালতে রিট করা প্রসঙ্গে নিপুণ গণমাধ্যমকে জানান, ভোটের রাতের অনিয়মের অনেক প্রমাণই রয়েছে তার কাছে। অভিযোগ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা সঠিকটি দেননি। আমার জানামতে ৮১টি ভোট বাতিল হয়েছে। কিন্তু তারা ভোট বাতিল দেখিয়েছে ৪১টি। আর এ ব্যাপারে আমার প্যানেলকে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট কিছুই জানায়নি।
নিপুণের রিটের প্রেক্ষিতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। ফলে আপাতত ডিপজল এ পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
এমআর//