অপরাধ

তিন বছর পর পুলিশ জানালো চিকিৎসক সাবিরার খুনি তার স্বামী

তিন বছর পর পুলিশ জানালো চিকিৎসক সাবিরার খুনি তার স্বামী
তিন বছর পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জানালো চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমানের খুনি তার নিজ স্বামী এ কে সামছুদ্দিন আজাদ। পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে চিকিৎসক সাবিরার খুন হওয়ার কথা জানা গেলেও খুনি কে তা জানানো হয়নি। অবশেষে এ ঘটনার প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হওয়ার পর খুনির সন্ধান দিলো পিবিআই। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সাবিরা হত্যায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সামছুদ্দিনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সাবিরা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সামছুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সাবিরা ও সামছুদ্দিনের আগের পক্ষের সন্তান ছিলো। কিন্তু স্বামীর সন্তানকে মেনে নিতে পারেননি সাবিরা। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ মে সকালে রাজধানীর কলাবাগানে নিজ বাসায় শোবার ঘর থেকে চিকিৎসক সাবিরা রহমান ওরফে লিপির (৪৬) রক্তাক্ত ও দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলা কাটা, পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পোড়া ছিল। তিনি রাজধানীর বেসরকারি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট (সনোলজিস্ট) ছিলেন। পিবিআইয়ের কর্মকর্তারা জানান, সাবিরার বাসায় তিনটি কক্ষ ছিল। একটি কক্ষে সাবিরা নিজে এবং বাকি দুটিতে কানিজ সুবর্ণা ও নুরজাহান নামে দুই তরুণী থাকতেন। সাবিরাকে আরবি পড়াতেন নুরজাহান। হত্যাকাণ্ডের আগে তিনি বাড়িতে গিয়ে আর ফেরেননি। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে (বিবিএ) পড়তেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আবার সাবিরার সঙ্গে বিয়ের আগে সামছুদ্দিন আরও দুটি বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি একটি বিয়ের তথ্য গোপন করেন। বিষয়টি জানার পরই স্বামীর সঙ্গে সাবিরার বিরোধ চরমে পৌঁছায়। সাবিরা কলাবাগানে আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। তবে তার ওপর সামছুদ্দিনের ক্ষোভ ছিল। এ কারণে তিনি সাবিরাকে খুন করেছেন। তার সঙ্গে আর কেউ ছিলেন কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে। সূত্র বলছে, স্বামীর সঙ্গে সাবিরার কলহের বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার দিনও রাত ১০টা ২৮ মিনিট থেকে দীর্ঘ সময় মেসেঞ্জারে দুজনের ঝগড়া হয়েছিল। ওই দিন সামছুদ্দিনের গাড়িচালক সাইফুল তার শান্তিনগরের বাসায় ছিলেন। এর আগে গাড়িচালক কখনো সামছুদ্দিনের বাসায় ছিলেন না। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পরিদর্শক জুয়েল দেওয়ান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে পিবিআই নিশ্চিত, সাবিরাকে তার স্বামীই হত্যা করেছেন। আগের দিন রাতে দুজনের মেসেঞ্জারে ২৬ মিনিট ঝগড়া হয়। পরদিন মরদেহ উদ্ধারের সময় সামছুদ্দিনের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। তিনি গোপনে কলাবাগানে সাবিরার বাসায় যেতেন। তদন্ত শেষে মামলার প্রতিবেদন প্রকাশ করবে পিবিআই। টিআর/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন তিন | বছর | পুলিশ | জানালো | চিকিৎসক | সাবিরার | খুনি | স্বামী