নরসিংদীতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান (৪০) হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামী রাসেল মাহমুদকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১ জুন) সকালে সংবাদ সম্মেলনে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) কাতার বিমান বন্দরে পৌঁছার পর কাতার ইমিগ্রেশন পুলিশ ১২ ঘন্টা আটক রাখার পর রাসেল মাহমুদকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায়। দেশে ফেরার পর শুক্রবার সকালে ঢাকা ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে নরসিংদী জেলা পুলিশে হস্তান্তর করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত রাসেল মাহমুদ মাধবদী থানার পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় সুপার শপ ব্যবসার পাশাপাশি দেশেও ব্যবসা করতেন। এছাড়া সদর উপজেলা যুবলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পরিকল্পিতভাবে সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার পর এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরমধ্যে এজাহারনামীয় আসামী রয়েছেন দুইজন। হত্যার কাজে ব্যবহৃত গুলির খোসা ও ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।
এসপি বলেন, এ হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী দুই নম্বর আসামী রাসেল মাহমুদ বিদেশে পালিয়ে যাবার সময় কাতার বিমান বন্দরে পৌঁছার পর ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার নিকট হতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। রিমান্ডের পর রাসেল মাহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকায় মাহবুবুল হাসানকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় আহত হয়েছেন তার সঙ্গে থাকা আরও ২ জন।
ভগিরথপুর গ্রামের হাজী ইমাম উদ্দিনের ছেলে নিহত মাহবুবুল হাসান মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
হত্যার ঘটনায় নিহত মাহবুবুল হাসানের ছোট ভাই হাফিজ উল্লাহ বাদী হয়ে গেলো বৃহস্পতিবার মাধবদী থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আতাউর রহমানকে প্রধান আসামী করে ও অজ্ঞাত ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
রাসেল মাহমুদ ছাড়াও হত্যার পর এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারকৃত অন্য আসামীরা হলেন-মাধবদী থানার পৌলানপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মো: হিমেল মিয়া (৪৩), জুয়েল মিয়া (৩৯), মো: নবেল (২৮), একই এলাকার কদম আলীর ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৬৫), টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার খানপাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো: রাব্বি (১৯), কুড়িগ্রাম জেলার ভুরঙ্গামারী থানার উত্তর ভরতের ছডা এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে ও মাধবদীর ভগিরথপুর টেক্সটাইল মিলস এলাকার বর্তমান বাসিন্দা মো: মিঠু (৩৫) ও মাধবদী থানার কবিরাজপুর এলাকার মো: জমির উদ্দিনের ছেলে মো: লিপু মিয়া (৪৫)।