উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১২১ জনের। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। এ ঘটনায় নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলেক বাবাকে খুঁজছে পুলিশ। এরই মধ্যে তার আশ্রমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কিন্তু ধর্মগুরুর সন্ধান এখনও মেলেনি বলে জানা গেছে।
বুধবার (০৩ জুলাই) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
আজ যে কেনো সময় ঘটনাস্থলে যেতে পারেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এরই মধ্যে তিনি এ ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আগরার অতিরিক্ত ডিজিপি।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ফুলরাই গ্রাম থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে মৈনপুরি এলাকায় আশ্রম রয়েছে ভোলেবাবার। পদদলিতের ঘটনার পর সেই আশ্রমে গেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। প্রশাসনের নির্দেশ, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের যেন কঠোর শাস্তি দেয়া হয়।
হাথরসের ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আলোচনা তৈরি হয়েছে এ বিপর্যয়ের কারণ নিয়ে। পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আয়োজক সৎসঙ্গ কমিটিকে দায়ী করছেন অনেকে। অনেকে প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন। আবার অনেকের দাবি, আগত ভক্তদের হুড়োহুড়ির কারণেই এ ঘটনা।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) হাথরসে সৎসঙ্গের ডাক দিয়েছিলেন নারায়ণ সাকার হরি ওরফে সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা। অনুষ্ঠানের শেষে হুড়োহুড়ি পড়ে পদদলিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, সৎসঙ্গের জন্য যে প্যান্ডেল বাঁধা হয়েছিল, তাতে ব্যারিকেড ছিল। পাখার ব্যবস্থা করা হয়নি। প্যান্ডেল খোলামেলা থাকলেও আর্দ্রতা ও গরমের কারণে সকলেই হাঁসফাঁস করছিলেন। ফলে সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরেই মানুষ হুড়মুড়িয়ে মাঠের বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আসা-যাওয়ার জন্য যে গেট তৈরি হয়েছিল, সেটিও অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অনেকে মাটিতে পড়ে যান। বাকিরা তাদের ওপর দিয়েই বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করেন। তাতেই মারা গেছেন শতাধিক ভক্ত।
মঙ্গলবার যখন এ ঘটনা ঘটে তখন লোকসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার মাঝেই বিষয়টি জানতে পেরে ভাষণ থামিয়ে তিনি শোকপ্রকাশ করেন। সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। এরপরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক্স হ্যান্ডল থেকে জানানো হয়, হাথরসের ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভোলে বাবার লাখো অনুসারী রয়েছে। ভারতজুড়ে তার অনুসারী ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছেন। তবে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখন্ড, রাজস্থান ও দিল্লিতে ভোলে বাবার অনুসারী বেশি।
এসি//