সম্প্রতি বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন, গুলি ও গণগ্রেপ্তারসহ নানা সহিংস বিষয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তে একটি ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ জুলাই) কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন ও মানাবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল কমিশনের যুগ্ম সভাপতি হবেন। কমিশনের সদস্য সচিব হিসেবে যুগ্মভাবে কাজ করবেন অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান ও লেখক-গবেষক মাহা মির্জা।
জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত সোমবার (১৬ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়ে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এই সহিংসতার প্রতিবাদে দেশজুড়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ পথে নেমে এলে রংপুরে আবু সাইদকে সরাসরি বুকে গুলি করা হয়। কিন্তু পুলিশ যখন মামলা দায়ের করে তখন সাধারণ ছাত্র এবং জনগণকে দায়ী করা হয়। এতে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, এবং এইসব ঘটনায় সত্য উদঘাটনের দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় পত্রিকার হিসেবে অন্তত ২০৯ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ হলেও, সরকারি হিসেবে তা ১৪৭ জন।
উক্ত আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, গুলি ও গণগ্রেফতারসহ নানা সহিংস উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, এবং তাতে সংবিধান, প্রচলিত আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
তাই এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটন, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আবশ্যকতা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে, দেশের শিক্ষক, আইনজীবী, সংস্কৃতি কর্মী ও সাধারণ অভিভাবকেদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কয়েকজন প্রথিতযশা ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় গণতদন্ত কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। ‘ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়-
জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের সদস্যরা হলেন:
১. বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন, সাবেক বিচারপতি, আপীল বিভাগ, সুপ্রীম কোর্ট
২. সুলতানা কামাল, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
৩. জেড আই খান, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
৪. আবু সাইয়িদ খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
৫. অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, শিক্ষক
৬. আশরাফ কায়সার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
৭. অনীক আর হক, আইনজীবী
৮. অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান
৯. মাহা মির্জা, লেখক ও গবেষক
এছাড়াও এই গণতদন্ত কমিশনে উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন:
১. তোবারক হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
২. সারা হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী
৩. ড. শাহদীন মালিক, আইনজীবী ও শিক্ষক
৪. অধ্যপক সলিমুল্লাহ্ খান, লেখক ও শিক্ষাবিদ
৫. কাজী মাহফুজুল হক সুপন, শিক্ষক
৬. রাশনা ইমাম, আইনজীবী
৭. জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী
৮. সাইমুম রেজা তালুকদার, শিক্ষক
তাই জাতীয় গণতদন্ত কমিশনের পক্ষ থেকে সকল সচেতন ব্যক্তিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১ জুলাই থেকে সংগঠিত বিভিন্ন সহিংস নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, গুলিবর্ষণ, হুমকি, মামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় তথ্য কমিশনের কাছে পাঠাতে শিগগিরই আহ্ববান জানানো হবে। এতে অডিও, ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও লেখাসহ যেকোন ধরনের তথ্য পাঠানো যাবে’ বলেও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এমআর//