জাতীয়

গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক: আইএসপিআর

বায়ান্ন প্রতিবেদন

আইএসপিআর এর লোগো। আইএসপিআর এর ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুরে বিক্ষোভকারীদের সেনা টহল দলের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া, জনসাধারণের জান-মাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক্যাম্প সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

রোববার(১১ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআর এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার(১১ আগস্ট) সেনাবাহিনীর কার্যক্রমগুলোর মধ্যে নারায়ণগঞ্জে ইপিজেডে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভকে আলোচনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণসহ চারজন জাপানি নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশকে সহযোগিতার লক্ষে বর্তমানে ৫৩৭টি থানায় সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং থানার স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে যোগদান করছে, যা চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় লুটপাটকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সাধারণ জনগণ সেনাবাহিনীর কাছে জমা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা পূর্বের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে এবং আটকদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে সরাসরি কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কয়েকটি জায়গায় অপহরণের ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরে পেতে সেনাবাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এ ছাড়া আন্দোলনে গুরুতরভাবে আহত ব্যক্তিদেরকে ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দিবা-রাত্রি যৌথ টহল পরিচালিত হয়, বিশেষ করে রাত্রিকালীন যৌথ টহল জোরদার করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, ‘সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনা সদস্যদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে সত্য মিথ্যার সংমিশ্রণে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সর্বসাধারণকে সকল প্রকার অপপ্রচার বন্ধ করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে। সেই সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, শনিবার (১০ আগস্ট) গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার গোপীনাথপুরে  বিক্ষোভকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেনা টহল দলের উপর হামলা করে। ওইদিন (শনিবার) আইএসপিআর এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ – ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দায়িত্ব পালনরত সেনাবাহিনীর ২টি টহল দল ঘটনাস্থলে গমন করে। এসময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা সেনা টহল দলের উপর ইট- পাটকেল ছুঁড়ে মারে এবং দেশীয় তৈরি অস্ত্র দিয়ে টহল দলের সদস্যদের আঘাত করলে ০৩ জন অফিসার, ০১ জন জুনিয়র কমিশন অফিসার ও ৫ জন সেনাসদস্য আহত হয়।

শনিবার আইএসপিআর আরও জানায়,  উক্ত ঘটনায় আহত সেনা সদস্যগণ আশঙ্কামুক্ত ও চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও তারা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং দুটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনা টহল দল ০৪ রাউন্ড এ্যামোনিশন ফায়ার করে। পরিস্থিতির তীব্রতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

এমআর//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গোপালগঞ্জ