প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের যে প্রেতাত্মারা বসে আছে তাদেরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য ধৈর্য ধারণ করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত দেশ পুনর্গঠন না হবে তত দিন পর্যন্ত আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিয়ে সহযোগিতা করতে চাই। বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সাতক্ষীরা শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে জেলা জামায়াত আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও শহীদ পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশ ও জনপদকে মুক্ত করতে যারা জীবন দিয়ে শহীদ হয়ে গেলেন, তারা আমাদের জাতীয় বীর। এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব শহীদের বীর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। জামায়াতের পক্ষ হয়ে আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে খুনিদের বিচার অবশ্যই বাংলাদেশে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা গণহত্যা পরিচালনা করেছেন তাদের বিচার এ দেশের মাটিতে হবে। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিচারের কার্যক্রম শুরু করেছে, আমরা তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। আন্তর্জাতিক আদালতেও ইতোমধ্যে গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ তার সব দোসরদের নামে মামলা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্র-জনতাকে হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলুম নির্যাতনের পরেও জামায়াতের নেতারা ফাঁসির দড়িকে চুম্বন করে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপস করেননি, অথচ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচারের লোকজন হিন্দু ভাইদের ব্যবহার করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু দেশের ছাত্র-জনতা সেটি নস্যাৎ করে দিয়েছে। জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা হিন্দু ভাইদের মন্দির, জমি-জায়গা পাহারা দিয়ে শান্তির বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করেছেন। কিন্তু বিগত দিনে আওয়ামী লীগের লোকজনই হিন্দু ভাইদের ঘর-বাড়ি, জায়গা-জমি দখল করে লুটপাট এবং মন্দির ভাংচুর করেছে।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাদ্দিস রবিউল বাশারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন - জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাদ্দেস আব্দুল খালেক, খুলনা মহানগরের সাবেক আমির মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, খুলনা অঞ্চলের সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম, খুলনা জেলা আমির ইমরান হুসাইন, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি শেখ নুরুল হুদা, জেলা ইসলামি ছাত্র শিবিরের সভাপতি ইমামুল ইসলাম, শহর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান।
এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাতক্ষীরার শহীদ আসিফসহ চার শহীদ পরিবারের মাঝে এক লাখ টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।
এসি//