বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গেলো ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৬৪০ জন। আহতের সংখ্যা ১৯ হাজার ২০০ জনেরও বেশি।
সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। যদিও গেলো বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টম্বর) জমা দেয়া ওই প্রতিবেদনে ৬৩১ জনের মৃত্যুর তথ্য উল্লেখ করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ও কমিটির প্রধান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, “নিহতের সংখ্যা আরো বাড়বে। কারণ সাভারে যারা মারা গিয়েছিল এবং যাদেরকে কোন কাগজ ছাড়া দাফন করা হয়েছিল তাদেরকে রিপোর্টিংএর সুযোগ দিতে হবে। ফলে আরো বাড়বে নিহতের সংখ্যা। এ সংখ্যা আজকে ৬৪০ জন”।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এই ২১ দিনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮১ জন মারা গেছেন।
এই আন্দোলনে হতাহতদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরি করতে গেলো ১৫ অগাস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে। গেলো বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে জানান মি. কবির।
তিনি বলেন, “ আহত ১৯ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে কিছু ব্যক্তি আছেন গুরুতর আহত। যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ইনডোরে ভর্তি ছিল সাড়ে সাত হাজারের মতো লোক”।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে ১৬ হাজার জনের বেশি সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্তত তিন হাজার জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মি. কবির বলেন, “এটি একটি খসড়া তালিকা। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর তথ্য আরও আপডেট করছেন। আরো ডেটা কালেক্ট করতে হবে। যেহেতু লোকগুলো চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাই তাদের তথ্য কালেক্ট করতে হবে। পাঁচ তারিখ পর্যন্ত অনেকেই সঠিক তথ্য দেয়নি”।
“সব হাসপাতালে রেজিস্ট্রারও সেইম স্ট্রাকচারে মেইনটেইন করে না। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করেই এই তথ্যগুলো তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রতি মুহূর্তেই এসব তথ্য বদলাবে। কম্পিউটারাইজড ডাটাবেইজের ধর্ম হচ্ছে একটা লাইভ ডাটা যখন ঢুকবে প্রতি মুহূর্তেই তা বদলাবে,” বলেন মি. কবির।
পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেতে আরো মাস খানেক সময় লাগবে বলে জানান মি. কবির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যার সংখ্যা প্রায় এগার হাজার। চট্টগ্রামে আহতের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুই হাজার।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে নিহতে সংখ্যা সর্বোচ্চ। এ বিভাগে নিহত হয়েছেন ৪৭৭ জন। নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে কম বরিশালে একজন। চট্টগ্রাম ও খুলনায় নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর আহত তিন হাজার ৪৮ জন। আঘাতের কারণে স্থায়ীভাবে শারীরিক অক্ষম হয়ে পরেছেন অন্তত ৫৩৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করছে বলে জানান মি. কবির।
এসি//