পূজা মানেই খাওয়া-দাওয়া। পূজা মানেই ইলিশ মাছ। আর ইলিশ মাছ মানেই সেই পদ্মার ইলিশ। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের নদী ও সাগরে ধরা পড়া রুপালি ইলিশ রফতানির পাশাপাশি ‘উপহার’ হিসেবেও যাচ্ছিল ভারতে। দুর্গাপূজার সময়ও বিপুল পরিমাণ ইলিশ ভারতে যায়। কিন্তু এবার পূজায় ভারতে বাংলাদেশের ইলিশ মিলবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলার ইলিশ চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে ভারত।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইলিশ রফতানির কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ভারতের ফিস ইমপোর্টার’স অ্যাসোসিয়েশন।
চিঠিতে সংগঠনটি লিখেছে, ‘অত্যন্ত বিনয় এবং শ্রদ্ধার সাথে আপনাকে (পররাষ্ট্র উপদেষ্টা) জানানো যাচ্ছে যে, আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ আমদানি করে আসছি। প্রতি বছর আমরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করি।’
এতে আরও বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যবশত, ২০১২ সালের জুলাইয়ে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সরকার ইলিশ মাছের রফতানি নিষিদ্ধ করে। এরপর থেকে আমরা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য তাদের কাছে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গত ৫ বছর ধরে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানি হয়েছে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ফিশ ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন।
এদিকে বাংলার পাশাপাশি ত্রিপুরা ও আসামেও বাংলাদেশের ইলিশ যায়। বছর ভর এপার বাংলার মানুষ বাংলাদেশের ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন। আর বাংলাদেশের ইলিশ হলে পূজা একেবারে জমে যায়। গত বছরও এক হাজার ৩০০ টন ইলিশ এসেছিল বাংলাদেশ থেকে। তবে এবার কতটা ইলিশ আসবে, আদৌ আসবে কিনা তা নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চয়তা মেলেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মার ইলিশ এপারে এলে খুশি হন মৎস্য ব্যবসায়ীরাও। কারণ এই ইলিশ বিক্রি করে লাভ অনেকটাই হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী বিবেচনা করে সফলভাবে দেশের শাসনভার গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দনও জানিয়েছে ভারতের ফিস ইমপোর্টার’স অ্যাসোসিয়েশন।
এএম/