জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও আগামীকাল শনিবার কাকরাইলে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে। জীবন যায় যাক, তবু যে অন্যায় ও বৈষম্য হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করবেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জি এম কাদের এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি ২০০৮ সালের নবম সংসদ থেকে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির ভূমিকা তুলে ধরেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ব্যানারে প্রথমে হামলা ও পরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টি বলেছে, ওই সময় নেতা-কর্মীরা শনিবারের সমাবেশের প্রস্তুতি সভা করছিলেন।
গত রাতের ঘটনার উল্লেখ করে জি এম কাদের এর নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ২ তারিখ (২ নভেম্বর, শনিবার) যে কর্মসূচি দিয়েছি, সে কর্মসূচি চালু থাকবে। কেউ ভয় পাবেন না যে যেখানে আছেন।...আমরা মরতে আসছি, আমরা মরতে চাই। কত লোক মারবেন ওনারা, আমরা সেটা দেখতে চাই। মনে রাখবেন, ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। হাত দিয়ে প্রতিবাদ করতে না পারলে মুখ দিয়ে করো। মুখ দিয়ে না পারলে অন্তর দিয়ে ঘৃণা করো। আমাদের সেটা করতে হবে। তার জন্য আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।’
সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো অপরাধ করিনি। আমাদের জোর করে অপরাধী করা হচ্ছে। কেন করা হচ্ছে, আমরা জানি না।’
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি জাতীয় পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দল। বারবার আমাদের কবরস্থ করার পরও আমরা কবর থেকে উঠে এসেছি। কেউ আমাদের ধ্বংস করতে পারেনি। যেহেতু আমরা সহাবস্থানের রাজনীতি করি, আমরা দখলদারি করিনি, সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না, হাট-মাঠ-ঘাট দখল করিনি, মানুষকে অত্যাচার-দলীয়করণ করিনি। আমরা মানুষকে সুশাসন দিয়েছি, উন্নয়ন দিয়েছি, সংস্কার দিয়েছি, গণতান্ত্রিক অধিকার দিয়েছি। মানুষ তা স্মরণ করে।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর শুরুর দিকে সেভাবে গুরুত্ব না দিলেও এখন তাঁর মনে হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর ষড়যন্ত্রটা এখনো চালু আছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের আওয়ামী লীগের দোসর বলা হচ্ছে। কিন্তু দোসর কীভাবে, এর কোনো জাস্টিফিকেশন নেই। ২০০৮ সালে নবম সংসদে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট করেছি। কিন্তু ওনার (শেখ হাসিনার) সব অপকর্মে আমরা একাত্ম ছিলাম না। এটা প্রমাণিত।
জাতীয় পার্টির বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন জি এম কাদের বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) যাঁকে আমরা জাতির অভিভাবক মনে করি। তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় একজন ব্যক্তি। যেহেতু প্রধান উপদেষ্টার সবচেয়ে ক্লোজ লোক আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। উনি (প্রধান উপদেষ্টা) কিছু বলেননি। তার মানে উনি মৌন সম্মতি দিয়েছেন বলে আমরা ধরে নিচ্ছি। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
এএম/