ছোট্ট মুনতাহার খোঁজ পেতে তৎপর হয়ে পড়েছিলেন দেশ-বিদেশের সকলেই। তার নিখোঁজের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। গেলো ৩ নভেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরে মুনতাহা। এরপর পাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। কিন্তু এরপর আর বাড়ি ফেরেনি ছোট্ট মুনতাহা। প্রিয়মুখটির সন্ধান পেতে স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করলেও পায়নি। অবশেষে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। শিশুটির সন্ধান পেতে জোর তৎপরতা চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।
শিশুটির সন্ধান দিতে পারলে দেশ–বিদেশ থেকে অনেকেই পুরস্কার ঘোষণা করেন। অবশেষে শিশুটির খোঁজ মিলল ঠিকই। তবে জীবিত নয়, নিথর দেহে বাড়ির পাশের পুকুর সন্ধান মেলে ছোট্ট মুনতাহার।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মরদেহটি সরানোর চেষ্টাকালে জনতার সহায়তায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটির দেহ যখন উদ্ধার করা হয় তখন তার শরীরে ছিল না প্রাণ। ক্ষতচিহ্ন দেখা যায় শরীরে। গলায় পেঁচানো ছিল রশি।
সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজ হওয়া শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে (৬) হত্যার পর পুঁতে রাখা হয় কাদামাটিতে। পুঁতে রাখা মরদেহটি খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টার সময় মা-মেয়েসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, মর্জিয়া আক্তার, তার মা আলীফজান ও আলীফজানের মা কুতুবজান। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা মর্জিয়ার বসতঘর গুড়িয়ে দেন।
শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর স্বজনরা পাগলপ্রায় হয়ে গেছেন। সান্ত্বনা দিতে আসা মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না। ছোট্ট যে শিশুটি সবসময় বাড়ির আঙিনা আলোকিত করে রাখতো তার এমন নিথর দেহ দেখে সবাই হাউমাউ করে কাঁদছেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেশী মর্জিয়া আক্তার ও তার মা আলীফজান মিলে তাকে হত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহাকে অপহরণের পর ওইদিনই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের পাশের একটি খালে কাদামাটিতে পুঁতে রাখা হয়। এরপর আলীফজান বেগম রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মরদেহ সরানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। এ সময় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মর্জিয়া, তার মা ও নানিকে আটক করা হয়। এর মধ্যে আলীফজান ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
ওসি বলেন, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে মর্জিয়াকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। এরপর রোববার ভোরে মরদেহ উদ্ধারের পর তাকে আটক দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
এসি//