অপরাধ

আজিমপুরে ডাকাতির সঙ্গে শিশু অপহরণ, চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো র‍্যাব

বায়ান্ন প্রতিবেদন

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস ও অপহরণকারী ফাতেমা আক্তার শাপলা।

রাজধানীর আজিমপুর থেকে অপহৃত শিশুকে মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। গ্রেফতার করা হয়েছে অপহরণে জড়িত ফাতেমা আক্তার শাপলা নামে এক নারীকে। শনিবার সকালে কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।   

গতকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে লালবাগ থানার আজিমপুরের মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারের ডাকাতি করতে যায় একদল ডাকাত। সেখানকার একটি বাসা থেকে নগদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ৬/৭ ভরি স্বর্ণালংকার লুটে নেয় তারা। যাওয়ার সময় ফারজানা নামে এক নারীর ৮ মাস বয়সী শিশু সন্তান জাইফাকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।   

র‌্যাবের পরিচালক জানান, অপহরণকারীদের দাবী ছিলো ১০ লাখ টাকা। কিন্ত এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। এছাড়া বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা পায়। এতে অপহরকারীরা নিরুৎসাহিত হয়। শিশুটিকে অচেতন করে রাখে ডাকাতরা। পাশাপাশি র‌্যাব ১০ এবং সদর দফতরের গোয়েন্দা বিভাগের সম্মিলিত অভিযান শুরু করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুরের আদাবরের নবীনগর হাউজিং এলাকাকে শিশু জাইফাকে উদ্ধার করা হয়।   

র‌্যাব আরও জানিয়েছে, অপহিৃত শিশু জাইফার মা ফারজানা আক্তার চাকরী করেন। অফিসে যাতায়াতের পথে তার সঙ্গে অপহরণকারী শাপলার পরিচয় হয়। ফারজানার কাছে তার নাম রাইসা এবং বাড়ি নওগাঁ জেলা বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়। পাশাপাশি সে সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকুরি করে। ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে তার একটি ভাল রুম দরকার। সাবলেট দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি জাইফাকে দেখভালও করতে পারবে। সে হিসেবে ফাতেমা আক্তারকে বাসা ভাড়া দেয়ার জন্য রাজি হন শিশুর মা ফারজানা আক্তার।

গেল ১৪ নভেম্বর বিকেলে শিশুর মাকে ২০০০ টাকা অগ্রিম ভাড়া দেয়। এবং বাসায় রাত যাপন করেন শাপলা। পরের দিন সকালে শাপলা জানায় যে, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে তার বাসায় আসবে।  সকাল সাড়ে ৮টার দিকে  শাপলার চাচাতো ভাই পরিচয়ে ৩ জন ওই বাসায় যায়। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে শাপলা ও তার কথিত চাচাতো ভাইয়েরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে ভিকটিম জাইফাকে নিয়ে চলে যায় শাপলা ও তার সহযোগীরা। পরে গ্রেফতার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।

র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত শাপলা একজন গৃহিনী। ২০১২ সালে বগুড়ার একটি স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে রাজধানীর একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে। পরবর্তীতে রাজধানীর আরেকটি কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও শেষ করেনি। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে তার বিয়ে হয়। বিগত ৩-৪ মাস আগে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকায় স্বামীর নিজস্ব ফ্লাটে বসবাস শুরু করে।

এনএস/ 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন অপহরণে