বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক মাসের (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এদিকে, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সাবেক ৯ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৩ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
সোমবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গণহত্যার মামলার তদন্তের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন জানাবে তদন্ত সংস্থা বলেও জানা গেছে।
যাদেরকে হাজির করা হলো তারা হলেন-সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক,সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেকমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম। অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় আজ হাজির করা হয়নি না সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. আব্দুর রাজ্জাককে।
জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তোলা হয়েছে। বর্তমানে অন্য মামলায় তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন।
এই ১৩ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের পর শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিয়ে শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধ শুরু হয়। ব্লাকআউট করে শাপলা চত্বরে হেফাজতের ওপর গণহত্যাসহ আওয়ামী শাসনামলে সব মানবতাবিরোধী অপরাধের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা। আর এই ১৩ আসামি ছিলেন তার সহযোগী।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে শাসনামলে এমন কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ নেই যেটা শেখ হাসিনা করেননি। আর উপস্থিত এই আসামিরা এসব অপরাধ সংগঠনে সহযোগিতা করে গেছেন। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার মধ্য দিয়ে ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা।
এর আগে, গেলো ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল তাদের হাজির করার আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন: বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
উল্লেখ্য, গেলো ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
এসি//