দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছে প্রায় ১৯৪৫ সালে। এরমধ্যে প্রায় ৮০ বছর বিশ্ব দেখেছে আরো কয়েকটি যুদ্ধ। এসব যুদ্ধে প্রাণহানি, সম্পদহানি ঘটলেও প্রথম বা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মত ভয়াবহ পরিনতি হয়নি। তবে এবার রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক অস্ত্র পরমাণু বোমা ব্যবহার হলে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ বিপর্যয়।
মঙ্গলবার পরমাণু শক্তিধর রাশিয়ার ভেতরে প্রথমবারের মত ছয়টি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করে ইউক্রেন। আর্মি ট্যাকটিকাল মিসাইল সিস্টেম, এটিএসিএমএস দিয়ে এই হামলায় মস্কোর একটি সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গেছে। এই হামলার কারনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংঘাতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনকে জবাব দিতে পরমাণু বোমা ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া।
আর হামলার সম্ভাবনায় বুধবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আমেরিকান দুতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। আমেরিকার সাথে রাশিয়ার হটলাইন বন্ধ করে দিয়েছে মস্কো। স্নায়যুদ্ধের সময়, ১৯৬২ সালে কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট চলাকালে দেশ দুটির রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে সরাসরি কথা বলার জন্য এই হটলাইন চালু করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার হামলার পরপরই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মস্কো। ওয়াশিংটনকে দায়ী করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়ে দিয়েছেন, এই হামলার মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলো যুদ্ধকে আরও বাড়াতে চায়। এই হামলা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা যুদ্ধের একটি নতুন অধ্যায়। মস্কো এর জবাব যথাযথভাবে দিবে।
ব্রাজিলে জি-২০ সম্মেলনে থাকা রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমা দেশগুলোকে মস্কার নতুন পরমাণু নীতি পড়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশা করছেন তারা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সই করা নতুন নীতির পুরোটাই পড়ে দেখবেন।
মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে, পুতিন তার পরমাণু নীতিতে বড় পরিবর্তন আনেন। নতুন নীতি অনুযায়ী, কোন পরমাণু শক্তিহীন রাষ্ট্র যদি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের সহায়তায় রাশিয়ায় হামলা চালায়, তবে তাকে যৌথ আক্রমণ বলে বিবেচনা করবে মস্কো।
এদিকে মস্কোর এই নতুন পরমাণু নীতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোয়ান। পশ্চিমাদের রাশিয়ার নতুন পরমাণু নীতির প্রতি মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, নিজেকে রক্ষার সামর্থ্য ও অধিকার মস্কোর আছে।
এনএস/
সূত্র- আলজাজিরা, আরটি।