শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে অবিলম্বে সরে আসতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি। একইসঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছে তারা।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর জন্য দুটি অধ্যাদেশ জারি করার ফলে মূল্যস্ফীতি ও ব্যবসার খরচ বাড়বে, যা সাধারণ মানুষের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সরকার রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়াবে এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, কিন্তু কর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে স্মরণ রাখতে হবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান যাতে নেমে না যায় ও তাদের ভোগান্তি যাতে না বাড়ে।
আখতার হোসেন বলেন, বিগত অবৈধ সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই কঠিন ঋণের শর্ত হিসেবে কয়েকটি ধাপে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি এ অধ্যাদেশগুলো জারি করেছে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সৃষ্ট সরকারের কাছে প্রশ্ন অবৈধ সরকারের ঋণের এই শর্ত বর্তমান সরকার পুনর্বিবেচনার জন্য আইএমএফকে আহ্বান জানিয়েছে কি? তারা একটি অবৈধ সরকারের চুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে পারেন না। সম্প্রতি টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে এ প্রক্রিয়া ‘অবমাননাকর’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সদস্য সচিব বলেন, ‘আমরা দেখেছি এ দেশের নাগরিকরা কীভাবে ট্রাকের পেছনে ৫ টাকা, ১০ টাকা কমে চাল, ডাল, তেল, চিনি কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। আমরা কল্পনাও করতে পারি না জনগণের প্রতি কতটা দায়হীনতা অনুভব করলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে’।
সরকার প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়াতে পারে, যা সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনমানের ক্ষতি করবে না। বিদ্যমান কর কাঠামোয় যে সীমাহীন দুর্নীতি হয় তা বন্ধ করার উদ্যোগ নিলে রাজস্ব আয় বাড়বে বলেও মনে করেন সাবেক এ ছাত্রনেতা
নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়, বিএনপির এমন বক্তব্যের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে তিনি বলেন, তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের মধ্যে যাওয়া ঠিক হবে না। বরং একটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন আখতার হোসেন।
এসময় জুলাই ঘোষণাপত্র জারির সময় নির্ধারণ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব।
আই/এ