ব্যবসায়ীদের তীব্র প্রতিবাদ ও বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়ার পর মোবাইলে রিচার্জ, রেস্টুরেন্ট এবং ওষুধের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-কে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এনবিআর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করবে।
এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানিয়েছে, ওষুধ ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ব্যবসায় ভ্যাটের হার কমতে পারে।
এর আগে গেলো ৯ জানুয়ারি, সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। এতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ২.৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ, মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ এবং রেস্টুরেন্ট সেবায় ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশকে কর-জিডিপি অনুপাত ০.২ শতাংশ বাড়ানোর শর্ত দিয়েছে। এ শর্ত পূরণে সরকারকে অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সঙ্গে এই অতিরিক্ত রাজস্বও যুক্ত করতে হবে।
এছাড়া আইএমএফ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, বকেয়া আদায় বা মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে এই রাজস্ব সংগ্রহ করলে চলবে না, বরং নতুন বাজেট পদক্ষেপের মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে।
এই প্রেক্ষাপটে এনবিআর ৯ জানুয়ারির আদেশে ভ্যাট এবং শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছিল। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, মোবাইল রিচার্জ, ইন্টারনেট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট সেবা, বিস্কুট, আচার, টয়লেট টিস্যু, ন্যাপকিন, ফলমূল, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, সিগারেট, জুস, এবং বিমান টিকিটসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়। তবে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা এবং সামাজিক প্রতিক্রিয়ার ফলে সরকার এখন মোবাইলে রিচার্জ, রেস্টুরেন্ট সেবা এবং জীবনরক্ষাকারী ওষুধের ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পথে।
এসি//