বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলার তদন্ত চলছে জোরেসোরে। হামলার ঘটনায় শরিফুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে শরিফুলের গ্রেপ্তার তদন্তে সাইফ আলি খান ও কারিনা কাপুর খানের বয়ান নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এরইমধ্যে ১৭ জানুয়ারি ভুল করে আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া নামে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। মুম্বাইয়ে পশ্চিম রেলওয়েতে একটি ট্যুর সংস্থায় গাড়িচালক হিসেবে কাজ করতেন কানোজিয়া। তার বিয়ের কথাও চলছিলো। দু’দিন পর মুক্তি পেলেও এই ঘটনার জেরে তিনি চাকরি হারিয়ছেন। অন্যদিকে, নিউজ চ্যানেলগুলোতে আকাশের ছবি দেখে হবু কনের পরিবারও তার বিয়ে ভেঙে দিয়েছে।
এমনই অভিযোগ করেছেন মুম্বাইয়ের কোলাবার বাসিন্দা আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া।সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কৈলাশ জানিয়েছেন, ‘আরপিএফকর্মীরা শুধু আমাকেই গ্রেপ্তার করেনি, আমার ছবিসহ একটি প্রেস বিবৃতিও দিয়েছে, যা টেলিভিশন চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমগুলো ব্যাপকভাবে দেখিয়েছে। ফলস্বরূপ, কনের পরিবার আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ বাতিল করেছে এবং আমার নিয়োগকর্তা আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, গেলো ১৭ জানুয়ারি আকাশকে মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় তিনি কোথায় আছেন।আকাশ বাড়িতে আছেন বলে ওই অফিসারকে জানালে পুলিশের কর্মকর্তা ফোন কেটে দেন।
১৮ জানুয়ারি কৈলাশ মুম্বাই থেকে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন ছত্তিশগড়ের তাঁর পৈতৃকবাড়ি নেহলায় অসুস্থ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে। ওই অসুস্থ আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করার পর কৈলাশের হবু কনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল।ওইদিন সকাল ১০টা নাগাদ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্গ রেল স্টেশনে পৌঁছালে হামলাকারী সন্দেহে আরপিএফ কর্মীরা তাঁকে আটক করে রায়পুরে নিয়ে যান। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর মুম্বাই পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে তাকে আটক করে।
ওইসময় আকাশ কৈলাশ মুম্বাই পুলিশকে জানান, সাইফ আলী খানের ওপর হামলার সঙ্গে তার কোনো যোগ নেই এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের তার আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তবে আকাশের কথা শোনেননি। বরং আকাশের ছবি তুলে গণমাধ্যমে প্রচার করে দাবি করে যে আকাশই হামলাকারী।
পরের দিন(১৯ জানুয়ারি) মুম্বাই পুলিশ কর্মকর্তারা কৈলাশকে ছেড়ে দেন। মুক্তি পাওয়ার পর নিয়োগকর্তাকে ফোন করলে তিনি আকাশকে কাজের জন্য রিপোর্ট করা বন্ধ করতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে আকাশের নিয়োগ কর্তা বলেন, ‘আপনি আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছেন, আপনার কারণে আমি সমস্যায় পড়তে চাই না। আমি তাকে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু তিনি আমার কথা শুনতে রাজি ছিলেন না।’
একই সময় দাদির কাছ থেকে একটি ফোন পেয়ে আকাশ জানতে পারেন, নিউজ চ্যানেলগুলোতে তাঁর ছবি দেখে হবু কনের পরিবার বিয়ে ভেঙে দিতে চাইছে। কৈলাশ বলেন, ‘যা ঘটেছে তারপর আমি নিশ্চিত নই যে ভবিষ্যতে বিয়ে করতে পারব কি না।’
দ্য হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আকাশ কৈলাশ আশা করেন আদালত শেষ পর্যন্ত তাকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেবে।’ এ ছাড়া তাঁকে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করে এমন সব ছবি ইন্টারনেট থেকে সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছেন আকাশ। আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় নিজের জন্য কোনো আইনজীবী নিয়োগ করার মতো ক্ষমতা নেই বলেও জানিয়েছেন সাইফের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের ভুলে আটক হওয়ার পর মুক্তি পাওয়া ৩১ বছর বয়সী আকাশ কৈলাশ কানোজিয়া।
এমআর//