সাইবার অপরাধীরা নামি-দামি ব্র্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করছে। এই ভুয়া সাইটগুলিতে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট, অনলাইন হোটেল বুকিং প্ল্যাটফর্ম, শপিং সাইট—নামী প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউআরএল বদলে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে। যখন কেউ এসব ভুয়া লিঙ্কে ক্লিক করে লেনদেন করছে, তখনই তারা প্রতারণার শিকার হচ্ছে।অপরাধীরা সহজে মানুষের ব্যাঙ্কের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে টাকা লুট করতে এই কৌশল ব্যবহার করছে।
গুগলে এমন অনেক ভুয়া ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো চিনতে না পেরে অনেকেই ওয়েবসাইতগুলোতে ঢুকে প্রতারিত হচ্ছেন। তাই ভুয়া ওয়েবসাইটগুলোকে কিভাবে চিনবেন,সেটি জেনে রাখা ভালো।
১) সাইবার অপরাধীরা ‘ডোমেন হোস্টিং’ সংস্থার মাধ্যমে পরিচিত ব্র্যান্ডের নামে সামান্য পরিবর্তন করে নতুন ওয়েবসাইট কিনছে। এরপর তারা আসলের মতোই হুবহু নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে। এসব ভুয়া ওয়েবসাইটের লিঙ্ক ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন জনকে পাঠানো হয়। যদি আপনার মেলবক্সে কোনও অচেনা আইডি থেকে লিঙ্ক আসে, তা ক্লিক করবেন না। এমনকি প্রলোভন দেখালেও সতর্ক থাকুন এবং ইমেইলে আসা অজানা আইডির লিঙ্ক এড়িয়ে চলুন।
২) যে সাইটটি খুলছেন, তার ইউআরএল ভালো করে পরীক্ষা করুন—তাতে ‘HTTPS’ আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। যদি কোনও ওয়েবসাইটের ঠিকানায় ‘HTTP’-এর সঙ্গে ‘S’ না থাকে, তবে সেটি নিরাপদ নয় এবং ভুয়ো হতে পারে।
৩) আর্থিক লেনদেনের আগে নিশ্চিত হতে চাইলে, ইমেইলে পাওয়া লিঙ্কটি সরাসরি গুগলে সার্চ করুন। যদি গুগল ওই ওয়েবসাইটের নামের বানান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বা সংশোধনের পরামর্শ দেয়, তাহলে সেটি সন্দেহজনক হতে পারে। তাই সতর্ক থাকুন এবং সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
৪) ভুয়া ওয়েবসাইটের ইউআরএলে ভুল বানান, ইমোজি বা কোনও অস্বাভাবিক চিহ্ন থাকতে পারে। তাই লেনদেনের আগে ইউআরএল ভালোভাবে যাচাই করুন।
৫) অনেক ওয়েবসাইটেই মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকে, বিশেষ করে অনলাইনে হোটেল বুকিং বা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সাইট সার্চ করলে এমন নম্বরসহ ওয়েবসাইট দেখতে পারেন। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো ভুয়া হয়ে থাকে। সাইবার অপরাধীরা অ্যালগরিদম ব্যবহার করে এসব নম্বর গ্রাহকদের সামনে নিয়ে আসে, যাতে কেউ সেই নম্বরে ফোন করলেই প্রতারণার ফাঁদে পা দেয়। তাই যেকোনো নম্বরে কল করার আগে সতর্ক থাকুন এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে যাচাই করুন।
জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ সতর্ক করছে যে, বর্তমানে বেশিরভাগ আর্থিক লেনদেন ও অনলাইন শপিং মোবাইলের মাধ্যমে হচ্ছে। কিন্তু মোবাইলের ছোট স্ক্রিনে ইউআরএল বা তার বানান ভালোভাবে পরীক্ষা করার ধৈর্য অনেকেরই থাকে না। এই সুযোগটাই নেয় সাইবার অপরাধীরা। তাই মোবাইল ব্যবহার করে কেনাকাটা বা নেট ব্যাংকিং করার সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
এসকে//