বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সহিংসতা ও নিপীড়ন হচ্ছে দাবি করে তা বন্ধে দায়ের করা একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
গেলো সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ ওই আবেদন খারিজ করে দেন।
আবেদন খারিজ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য মোটেও নয়। আপনার কি মনে হয় সরকার এটা সম্পর্কে অবগত নয়? এই আদালত কীভাবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারে?’ আদালতের পক্ষে এ ধরনের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা অত্যন্ত অদ্ভুত হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, পাঞ্জাবের লুধিয়ানার ব্যবসায়ী ও ইসকন মন্দির স্টিয়ারিং বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান এবং লুধিয়ানার ভগবান জগন্নাথ রথযাত্রা মহোৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজেশ ধান্ডা ভারতের ওই আবেদন করেছিলেন।
ইসকন নেতার ওই আবেদনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল, যাতে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশন ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সংখ্যালঘুদের সহায়তা প্রদান করে ও প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা, আধুনিক ইতিহাসে বহু সার্বভৌম রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আদালত ও জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক ফোরামের মাধ্যমে অন্য দেশগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় উত্থাপন করেছে। কিন্তু ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
আবেদনে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (হিন্দু, শিখ, জৈন ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘু) অবস্থা ভয়াবহ এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ধারাবাহিক ধর্মীয় আক্রমণের ফলে তারা দেশত্যাগের সম্মুখীন। বাংলাদেশ সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি, যাতে সেখানকার হিন্দুদের ওপর চলমান নৃশংসতা বন্ধ হয়।
আবেদনে ভারতের নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯-এর অধীনে ‘কাট-অফ ডেট’ বাড়ানোরও দাবি করা হয়েছে, যাতে সাম্প্রতিক শত্রুতার কারণে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দুরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। আরও অনুরোধ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে হিন্দু সংখ্যালঘুদের সাহায্য ও সহায়তা প্রদানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হোক।
এমআর//