৮ বছর বয়সী আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার বিচার কাজ সাত দিনের মধ্যে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সচিবালয়ের আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব জানান।
আসিফ নজরুল বলেন, শিশুটির ময়নাতদন্ত আজকেই সম্পন্ন হবে। এরইমধ্যে ডিএনএ স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে। এ ঘটনায় ১২ থেকে ১৩ জন ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ধর্ষণ ও বলাৎকারের মামলাগুলো দ্রুত বিচার করতে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করা হবে।
প্রসঙ্গত, লাইফ সাপোর্টে থাকা আবস্থায় শিশুটি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) মারা যায়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
পোস্টে জানানো হয়েছে, অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানানো যাচ্ছে যে, মাগুরায় নির্যাতিত শিশুটি আজ ১৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এর সর্বাধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শিশুটির আজ সকালে তিনবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে, দুইবার স্থিতিশীল করা গেলেও তৃতীয়বার আর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসেনি।
পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক কর্নেল নাজমুল হামিদ বলেন, আজ সকালবেলা দুই দফায় শিশুটির কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে। কিন্তু বেলা ১২টায় তার আবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এই দফায় সিপিআর দেওয়ার পরও তার হৃৎস্পন্দন আর ফিরে আসেনি। বেলা ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা
জানাচ্ছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী শিশুটির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে।
গেলো বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় ওই শিশুটি। পরের দিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
শুক্রবার (০৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। গত শনিবার (০৮ মার্চ) সন্ধ্যায় সংকটাপন্ন শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার (০৯ মার্চ ) শিশুটিকে সিএমএইচের পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেয়া হয়।