দেশজুড়ে

অর্থাভাবে থেমে গেল জীবন, মাথায় গুলি নিয়েই চলে গেলেন হৃদয়

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত কিশোর আশিকুর রহমান হৃদয় (১৭) মারা গেছেন। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

টাঙ্গাইলের পশ্চিম যৌতা গ্রামের বাসিন্দা রিকশাচালক আনসার হাওলাদারের ছেলে হৃদয় ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন। গেলো বছরের জুলাই মাসে যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনে মাথায় তিনটি গুলি লাগে তার। গোপনে চিকিৎসা নেওয়ার পর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা দুটি গুলি অপসারণ করলেও একটি গুলি রয়ে যায় মাথায়।

এতে পুরোপুরি সুস্থ্য হতে পারেনি হৃদয়। পরিবার জানায়, উন্নত চিকিৎসার সামর্থ্য ছিল না তাদের। মাঝে মাঝেই জ্বর, মাথাব্যথায় ভুগতেন হৃদয়। গেলো বুধবার (২ এপ্রিল) ফের অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদিন বিকেল ৩টার দিকে সেখানেই মারা যান তিনি।

হৃদয়ের বাবা আনসার হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সব কিছু বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাতে চেয়েছি। কিন্তু বিদেশে নেওয়ার মতো টাকা ছিল না। যদি চিকিৎসার সুযোগ পেত, ও হয়তো আজ বেঁচে থাকতো।’

হৃদয়ের বড় ভাই সোহাগ ইসলাম আনিস বলেন, ‘ভাই মাথায় গুলি নিয়ে দীর্ঘদিন কষ্ট পেয়েছে। কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি। চিকিৎসার অভাবেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সাম্মি ইসলাম তরণ বলেন, ‘নিহতের শারিরীক পরীক্ষা করার পরে আমরা বুঝতে পারি তার ব্রেইন ও ব্রেইনের পর্দায় ইনফেকশন হয়ে তিনি অজ্ঞান হয়েছিলেন। পরিবারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। তবে তার পরিবার আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় তারা সিদ্ধান্ত নেয় তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা চালাবে। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন হৃদয় অবস্থায় মারা যান।‘

এমএ//

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন গণঅভ্যুত্থান | জুলাই যোদ্ধা | পটুয়াখালী