পাবনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টি আর) কর্মসূচির বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহারে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে উঠেছে।বিষয়টি নিয়ে জেলায় শুরু হয়েছে চরম আলোচনা সমালোচনার ঝড়। স্থানীয় দুস্থদের মাঝে ও গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের কথা থাকলেও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতেই। তবে নিজেদের ভূল স্বীকার করে প্রকল্প সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টি আর) প্রকল্পের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের হাত দিয়ে গ্রামীন এলাকায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও দরিদ্র জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীন এলাকায় খাদ্যশস্য সরবরাহ ও জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিসহ সমাজের বিভিন্ন উন্নয়ন করার জন্য একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে সংসদ সদস্য না থাকায় প্রকল্পটি প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২৭ ফেব্রুয়ারিতে পাবনা জেলা প্রশাসকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় থেকে বরাদ্দ দেওয়া তালিকায় দেখা যায় এ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষন (টি আর) কর্মসূচির আওতায় সর্বমোট ৬০ লাখ টাকার বরাদ্দ ভাগাভাগি করা হয়েছে। তার মধ্যে বেশীরভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে।
বরাদ্দগুলোর মধ্যে জেলা প্রশাসকের মটর গ্যারেজ নির্মাণে ৩ লাখ ৯০ হাজার,সার্কিট হাউজের গ্যারেজ সংস্কারে ২ লাখ, সার্কিট হাউজের পুকুরের পাড় বাধাই ও ঢালাই সংস্কারের কাজে দেড় লাখ, আগাছা পরিষ্কার ও ফুলের বাগান সৃজন কাজে দেড় লাখ, সার্কিট হাউজের শোভা বর্ধনের কাজে ১ লাখ ২০ হাজারসহ ৩৩ টি প্রকল্পে মোট ৬০ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পাবনা নাগরিক মঞ্চের সদস্য সচিব জাকির হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসন এবার টি আর প্রকল্প যেভাবে সাজিয়েছেন তাতে দেশের দারিদ্র বিমোচনে কোনা ভূমিকাই রাখেনি৷ বরং নিজদের আরাম আয়েশের জন্য প্রকল্পের বরাদ্দ নিয়েছেন৷ যেটা মোটেও ঠিক হয়নি। এটি জনগনকে ধোকা দেয়া বলা চলে৷
পাবনা চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ও পাবনা প্রেসক্লাবের সদ্য সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের উচিত ছিলো এই বরাদ্দ গ্রামীন অবকাঠামোর যাতে উন্নয়ন হয় সেদিক খেয়াল রেখে বরাদ্দ দেওয়া। তা না হলে জনগনের সাথে প্রতারণা করা হলো৷
এসব বিষয়ে জানতে পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি বলেন এই প্রকল্পের কোনো অনিয়ম হয়নি৷ নিয়ম মেনেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে৷ এছাড়া সারাদিন অনেক কাগজপত্র স্বাক্ষর করতে হয় সেক্ষেত্রে হয়তো ভুল হয়েছে। এখন যেহেতু আপনারা (সাংবাদিকরা) এ বিষয়ে বললেন তিনি পুরাতন বরাদ্দ বাদ দিয়ে নতুন করে আবার বরাদ্দ দেবেন।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় সারাদেশে আটটি বিভাগে ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় সকল উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য। সেখানে পাবনার জেলা প্রশাসকের কাছে ২০ লাখ টাকা আসলেও তা দেওয়া হয়নি কোন উপজেলাতেই।
আই/এ