বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহিদ জসিমের কলেজপড়ুয়া মেয়ে লামিয়া গেলো শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানী ঢাকার শেখেরটেকের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ১৮ বছর। তার আত্মহননের ঘটনায় পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২৭ এপ্রিল) লামিয়ার মরদেহ পটুয়াখালীতে পৌঁছানোর পর শহিদ জসিমের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে। গত ১৮ মার্চ, শহিদ জসিমের মেয়ে লামিয়া পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে বাবার কবর জিয়ারত করতে যান। ফিরতি পথে স্থানীয় দুই যুবক, সাকিব ও সিফাত তাকে ধর্ষণের শিকার করেন। তাদের হুমকিতে কোনো অভিযোগ না জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়, এবং লামিয়া সাহসিকতার সঙ্গে দুমকি থানায় মামলা করেন। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় এবং তারা বর্তমানে পটুয়াখালী কারাগারে আটক রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকেই লামিয়া মানসিক অস্থিরতা, অপমানবোধ এবং সামাজিক চাপের কারণে চরম হতাশায় ভুগছিলেন। তাদের ধারণা, এসব মানসিক যন্ত্রণাই তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, লামিয়া অত্যন্ত সাহসী ছিলেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তবে বিচারহীনতা, সামাজিক অবজ্ঞা এবং মানসিক চাপের কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেন।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, লামিয়ার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদ জসিমের মৃত্যু হয়েছিল। তার মেয়ে লামিয়ার এই মর্মান্তিক মৃত্যু তার পরিবারের জন্য একটি হৃদয়বিদারক অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ জানিয়েছেন, তারা এই ঘটনায় দ্রুত তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে।
এসি//