মানিকগঞ্জের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন দেওয়ার পর দুই নবজাতকের মৃত্যু ঘটেছে। শুক্রবার (১৭ মে) রাতে উপজেলার সিঙ্গাইর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটেছে।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জে.ও.এম তৌফিক গণমাধ্যমকে বলেন, মাজেদুল ইসলামের নবজাতককে এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত মেয়াদ থাকা ২৫০ মিলি টেজিড ইনজেকশন পুষ করার পর তার হার্টবিট কমে যায়। পরে শিশুটিকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়, তবে শিশুটি রাস্তায় মারা যায়। একইভাবে ফিরোজ আলমের নবজাতককে শনিবার সকালে একই ধরনের ইনজেকশন দেওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিঙ্গাইর এলাকার মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী এবং শায়েস্তা ইউনিয়নের মো. ফিরোজ আলমের স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে সিঙ্গাইর ক্লিনিকে ভর্তি হন। সেইদিন বিকেলে গাইনি ডাক্তার শামিমা রহমান তাদের সিজার করেন। অপারেশনের পর মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী একটি ছেলে এবং ফিরোজ আলমের স্ত্রী একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। তবে কিছু সময়ের মধ্যে নবজাতক দুটির মৃত্যু হয় ।
নিহত নবজাতকের বাবা ফিরোজ আলম বলেন, আমার ছেলে জন্মের পর সুস্থ ছিল। কিন্তু সকাল ১১টার দিকে নার্স মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন পুষ করার এক ঘণ্টার মধ্যে আমার ছেলে মারা যায়।
অন্যদিকে, মাজেদুল ইসলাম বলেন, আমার সন্তান সুস্থ ছিল। কিন্তু ইনজেকশন দেওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি ঘটে পরে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথেই সে মারা যায়।
সিঙ্গাইর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোস্তাক আহমেদ অস্বীকার করে বলেন, কোনোভাবেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন তাদের দেয়া হয়নি। জন্মের পর মাজেদুল ইসলামের সন্তানের কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়, যার কারণে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। ফিরোজ আলমের সন্তানের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তার চিকিৎসা করা হয় এবং তা কোনোভাবেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশন ছিল না। পরিবার দুইটির সাথে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেছে। এতে তাদের কোনও অভিযোগ নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাফছান রেজা বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে পুরো ঘটনার তদন্ত করব এবং নিশ্চিত হব। যদি কোনও গাফিলতি থাকে তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি জে.ও.এম তৌফিক আজম জানান, নবজাতকদের মেয়াদ উত্তীর্ণ ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসকে//