অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ও বিভাগটির এক ছাত্রীকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অধিকতর তদন্তে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক এম গোলাম সাদিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে অনুষ্ঠিত ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুক্রবার উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছন।
উপ-উপাচার্য বলেন, বিভাগের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রী বিভাগীয় কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ মে ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হেদায়েত উল্লাহ ও বিভাগটির এক শিক্ষার্থীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের একটি নির্জন কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রী ঘটনাটিকে সম্পূর্ণ সাজানো এবং পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, ভিডিও ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থী ও দুজন সাংবাদিকসহ মোট চারজন তাদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা দাবি করেন।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০ মে অধ্যাপক হেদায়েত উল্লাহ নগরীর মতিহার থানায় চারজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। আসামিরা হলেন আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম সুমন এবং ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন সজীব।
এদের মধ্যে সাজ্জাদ দৈনিক কালবেলা এবং সুমন খবরের কাগজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন। দুজনকেই প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এরপর তদন্তের অংশ হিসেবে তার ব্যক্তিগত কক্ষটি সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে অভিযুক্ত সাংবাদিকরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, তারা কোনও ধরনের চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন এবং পুরো বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে।
এসকে//