বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে বললে সরকারের কয়েকটি কর্ণার বিলম্বিত করে সরকারকে টেনে নিয়ে যেতে চায়। আর এই দায়-দায়িত্বগুলো প্রধান উপদেষ্টার ঘাড়ে এসে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি রোডম্যাপ, উনি নিজে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। রাষ্ট্র পরিচালনায় আবেগের কোনও বিষয় নেই। আবেগতাড়িত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয় নয় এটি। আমরা তো উনার পদত্যাগ চাইনি। তারপরও উনি যদি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন যে, উনার অসুবিধা হচ্ছে, থাকতে চান না, তখন জাতি সেটার বিকল্প চিন্তা করবে। এই পৃথিবীতে কেউ অপরিহার্য নয়।
শুক্রবার (২৩ মে) একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তীক সরকার ও বিএনপির মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতি তৈরি হচ্ছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে এটি মনে করে বিএনপি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছিলো। কিন্তু ৫-৬ দিনেও তার সাক্ষাৎ না পাওয়া দুঃখজনক তাতেই বুঝা যায়, সম্পর্ক কী রকম যাচ্ছে। বিএনপি সরকারকে সবসময় সহযোগিতা করলেও সরকারেরই কোনও মহল বিএনপিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তাদেরর কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে হয়ে কাজ করছে।
সেনাপ্রধানের করিডর, নির্বাচন ও চট্রগ্রাম বন্দর প্রসঙ্গে করা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধান তার আইনি এখতিয়ারের মধ্যে থেকে কর্মকর্তাদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে অ্যাড্রেস করতে পারেন। বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে পারেন, আমরা সেটি সমর্থন করি। তিনি বলেছেন যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা উচিত, সে কথা গত জানুয়ারি বা তার আগেও বলেছেন। তখন তো এ বিষয়ে এত বিতর্ক হয়নি। সেনাবাহিনী তো অনির্দিষ্টকালের জন্য মাঠে থাকতে পারে না। এটা আমাদের জন্য ভালো দিক যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যথাসম্ভব গণতন্ত্রে ফিরতে চান। আর আমরা সিভিলিয়ানরা কি সেটা চাই না? উনি (সেনাপ্রধান) সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো কোনও কর্মকাণ্ড করতে দেবেন না বলেছেন, সেটা তো ঠিকই আছে। আমরা উনার বক্তব্যকে সমর্থন করি। এই কারণেই করি যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছে’।
তিনি বলেন, বিএনপি মনে করে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গোষ্ঠীগত স্বার্থের জন্য কিছু ব্যক্তি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতায় রাখার তৎপরতা চালাচ্ছে। নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের পদক্ষেপ তার নমুনা বলে মনে করেন তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘সরকারের ভেতরে ও বাইরে কয়েকটি চক্র আছে, যারা নির্বাচন চায় না। কেউ কেউ চাইলেও অনেক বিলম্বে চায়। আমরা আরও কয়েকদিন দেখবো, প্রধান উপদেষ্টার যদি শুভবুদ্ধি উদয় হয়, তাহলে ভালো। অন্যথায় আমরা আমাদের পন্থা বেছে নেবো’।
প্রসঙ্গত, সরকারের বিষয়ে শিগগির যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদেরও বিএনপির অবস্থান জানানো হবে বলে জানান এ বিএনপি নেতা।
আই/এ