বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি কখনও সংস্কারের বিরোধিতা করেনি; বরং দলটি নিজেই একটি সংস্কারমুখী রাজনৈতিক দল। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সব সিদ্ধান্তের ভিত্তি হওয়া উচিত জনগণের মতামত ও সম্মতি।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিএনপি ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যে সংস্কারসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেছেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে আগেই জানিয়েছি- বিএনপি কখনও সংস্কারের বিরোধিতা করেনি; বরং বিএনপি নিজেই একটি সংস্কারমুখী দল। তবে কিছু মানুষ আছেন, যারা এ নিয়ে নানা কথা বলেন। অথচ তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’
গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি এই সরকারকে সহযোগিতা করছি সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’
যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ নাও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলেন নজরুল ইসলাম খান। সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয় বলেন তিনি। আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায় আমরা জানি।’
আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের এই আলোচনা দিনব্যাপী চলতে পারে। তবে আলোচনা আজ শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে বসবে কমিশন।
আলোচনার সূচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি স্থায়ী ও কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’
সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামতের জন্য পাঠানো হয়।
এই সুপারিশগুলো স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে প্রেরণ করা হয়, যার জবাব দিতে বলা হয়েছিল ১৩ মার্চের মধ্যে। প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে ঐকমত্য কমিশন ইতোমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথকভাবে আলোচনা শুরু করেছে।
এই ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করবে ঐকমত্য কমিশন, যা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
এসি//