ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় গেল কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ত্রিপুরা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ১৯টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, যেখানে প্রায় ৪৫০টি পরিবার পানির নিচে আটকা পড়েছে। বিশেষ করে রাতে বৃষ্টির পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, ত্রিপুরা এলাকা থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশের সড়ক ও আশপাশের খালগুলোর পানি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে বেশ কিছু দোকান ও ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে এবং স্থানীয়দের জীবনযাত্রাও থমকে গেছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আখাউড়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন-দক্ষিণ আখাউড়া, মোগড়া এবং মনিয়ন্দ এর মোট ১৯টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এই অঞ্চলে প্রশাসন তৎপর হয়ে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিএম রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, পানিবন্দি মানুষদের সহায়তার জন্য শুকনো খাবার পাঠানো হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান জানান, ত্রিপুর হাওড়া নদীর পানি বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার ওপরে চলে গেছে, যা বাংলাদেশে প্রবাহিত হতে চলেছে। ফলে বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, স্থলবন্দরের কার্যক্রম কোনও ধরণের বাধা ছাড়াই চলমান রয়েছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, বন্যার মধ্যে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ১৫ মেট্রিক টন মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এছাড়াও ৪০-৪৬ জন যাত্রী ভারতে যাওয়ার জন্য বর্ডার পার করেছেন।
এ বন্যার সূত্রপাত ঘটে গেল ২৮ মে সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিপাত ও ঢলের কারণে। মোগড়া, মনিয়ন্দ এবং দক্ষিণ ইউনিয়নসহ আখাউড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পানি প্রবাহিত হতে শুরু করে, যা স্থানীয়দের জন্য বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যার ফলে গেল রোববার পর্যন্ত ১০টি গ্রাম প্লাবিত ছিল।
এসকে//