যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার অভিবাসন দপ্তরে রুটিন চেক-ইনের সময় আটক হয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত এক বাংলাদেশি অভিবাসী। কোনো ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই অরেঞ্জ কাউন্টির বাসিন্দা মো. রহমানকে আটক করা হয়েছে। ফলে হঠাৎ করেই গভীর সংকটের মুখে পড়েছে রহমানের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও দুই সন্তান।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (০৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কেটিএলএ ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৮ বছর বয়সী রহমান ১৯৯১ সালে মাত্র চার বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তার বাবা-মা বাংলাদেশ থেকে পর্যটক ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। তৎকালীন রাজনৈতিক অনিরাপত্তার কথা জানিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন তারা।
তবে, ১৯৯৭ সালে তাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগের আদেশ জারি করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। বহু বছর ধরে মামলা ও আপিল চলার পর ২০০৮ সালে তাকে আটক করা হলেও পরে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয় এবং নিয়মিত ইমিগ্রেশন চেক-ইনের আওতায় থাকার সুযোগ পান।
এরপর থেকে রহমান প্রতিটি চেক-ইনে নিয়মিত উপস্থিত থেকেছেন এবং বৈধ মর্যাদা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
কিন্তু চলতি বছরের ৭ মে সান্তা আনায় নিয়মিত চেক-ইনের সময় তাকে আটক করা হয় এবং নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাডেলান্তোর একটি বন্দি কেন্দ্রে।
রহমানের গর্ভবতী স্ত্রী আশান্তি মাইনর জানান, ওই দিনটা ছিল আমাদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর দিন। আমরা ভাবিনি তিনি আর ফিরে আসবেন না। তার কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই।"
তিনি আরও জানান, তাকে যদি বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়, তবে সেখানে তিনি সম্পূর্ণ অচেনা পরিবেশে জীবন শুরু করতে বাধ্য হবেন। 'বাংলাদেশে আমার কেউ নেই, ভাষাটাও জানি না,' বলে জানিয়েছেন আশান্তি।
রহমানের আইনজীবীরা জরুরি ভিত্তিতে তার দেশে ফেরত পাঠানোর আদেশ স্থগিত করার আবেদন করেছেন। তবে বিষয়টি এখন আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
এদিকে, গর্ভবতী আশান্তি দুই সন্তান নিয়ে একা সংসার সামলাচ্ছেন। ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তাকে প্রতিনিয়ত ভীত করে তুলছে।
এমএ//