আন্তর্জাতিক

‘বাঙালি মুসলিম’ হলেই নিজেদের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মাতৃভাষা বাংলা আর ধর্ম ইসলাম। শুধু এই দুই পরিচয় থাকলেই যে কাউকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ তকমা দিচ্ছে ভারত সরকার। শুধু তকমা নিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছে না, বরং তাদের অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। চাঞ্চল্যকর এমন তথ্য প্রকাশ করে উদ্বেগ জানিয়েছে ভারতীয় মানবাধিকারকর্মীরা। 

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, নির্বিচারে লোকজনকে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই বহিষ্কার অভিযানে বহু নিরীহ মুসলিম নাগরিককে শুধু ভাষা ও ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে টার্গেট করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স। 

প্রতিবেদনে অনুযায়ী, মে থেকে জুন মাস পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্য ৩০৩ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হয়েছে। গেল কয়েক বছরে বিভিন্ন ট্রাইব্যুনাল ‘বিদেশি’ ঘোষিত ৩০ হাজার মানুষকে এ কার্যক্রমের টার্গেটে পরিণত করা হয়েছে। অথচ, এ ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন আসামে। সেখানে তাদের বাড়িঘর ও জমিজমাও আছে।

মানবাধিকারকর্মীরা জানিয়েছে, এ মুসলিম পরিবারগুলোকে প্রায়ই ভুলভাবে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারা এতটাই দরিদ্র যে, উচ্চ আদালতে ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার মতো আর্থিক অবস্থাও নেই তাদের। এই অভিযানে শুধু মুসলিমদেরই লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। 

বাংলাদেশের সঙ্গে ২৬০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) সীমান্ত আছে আসামের। গত মাস থেকে রাতের অন্ধকারে মুসলিমদের ‘পুশ ইন’ শুরু করেছে রাজ্যটির কর্তৃপক্ষ। 

আসামে এ ধরনের পদক্ষেপ রাজনৈতিকভাবে জনপ্রিয়। কারণ, সন্দেহভাজন এ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বা বাঙালি ভাষাভাষীদেরকে চাকরির বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করে স্থানীয় আসামীরা। 

এর আগে গেল সোমবার (৯ জুন) আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও রাজ্য বিধানসভায় ঘোষণা করেছেন, বিদেশি বিতাড়নের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের চাপ রয়েছে। আমরা ৩০৩ জনকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছি। এই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে। 

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের কার্যক্রম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থি। 

তাদের আশঙ্কা, বিচারাধীন এবং প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদেরও ভুয়া নথির ভিত্তিতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।

এমএ//

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #পুশ ইন #ভারত #ভারতীয়