ব্রিটেনে রাষ্ট্রীয় সফরে এসে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি ও ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য ব্রিটেনের সমর্থন চেয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ব্রেক্সিটের পর এই প্রথম কোনো ইউরোপীয় নেতা রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে গেলেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) ব্রিটিশ সংসদের উভয় কক্ষে এক বিরল ভাষণে ম্যাকরন ফ্রান্স-ব্রিটেন সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
বুধবার (০৯ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, দুটি দেশকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ওপর ‘অতিরিক্ত নির্ভরতা’ কমাতে একসাথে কাজ করতে হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের এই তিন দিনের সফরটি কিং চার্লস তৃতীয়ের আমন্ত্রণে হয়েছে।
ম্যাক্রোঁকে রাজপরিবারের সদস্যরা অভ্যর্থনা জানান, যার মধ্যে রয়েছেন রাজ পরিবারের উত্তরাধিকার প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী প্রিন্সেস ক্যাথরিন। এরপর তারা ঘোড়ার গাড়িতে করে উইন্ডসর ক্যাসেলে যান।

সংসদে ভাষণ দিয়ে ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপকে শক্তিশালী করতে—প্রতিরক্ষা, অভিবাসন, জলবায়ু ও বাণিজ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে—ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এও বলেন, ‘ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে আবার বিশ্বকে দেখাতে হবে যে আমাদের জোট বড় পরিবর্তন আনতে পারে। আমাদের সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একমাত্র উপায় হলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া।’
ম্যাক্রোঁ ইউক্রেনের সমর্থনে ইউরোপীয় দেশগুলোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, তারা ‘কখনই ইউক্রেনকে ত্যাগ করবে না’, পাশাপাশি গাজায় নির্বিচারে যুদ্ধবিরতি দাবি করেন।
তিনি ব্রিটেনকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে ফ্রান্সের সাথে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এটি ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়’।
ম্যাক্রোঁ তার ভাষণে ফ্রান্স ও ব্রিটেনের সামনে থাকা ভূরাজনৈতিক হুমকির প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ওপর ‘অতিরিক্ত নির্ভরতা’ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি ও সমাজকে এই দ্বৈত নির্ভরতা থেকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে।’
এছাড়া দুই দেশের শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিল্পীদের পারস্পরিকভাবে বসবাস সহজ করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও অনলাইনে শিশু সুরক্ষার মতো নতুন প্রযুক্তি ও নীতিনির্ধারণী বিষয়ে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ম্যাক্রোঁ।
এসি//