লাইফস্টাইল

বিড়ালের আঁচড় শুধু ক্ষত নয়, হতে পারে বিপজ্জনক সংক্রমণের কারণ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

ঘরে পোষা প্রাণী থাকলে বিশেষ করে কুকুর বা বিড়াল, তখন অনেকেই তাদের সঙ্গে খেলার সময় আঁচড় বা কামড়ের ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দেন না। অনেকেই ভাবেন, অ্যান্টিসেপ্টিক মলম লাগিয়ে নিলেই সব মিটে যাবে। কিন্তু এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। যেমন কুকুরের কামড় জলাতঙ্কের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনই বিড়ালের আঁচড় বা কামড় থেকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া যা শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।

বিড়ালের শরীরে একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়া থাকে, যার নাম Bartonella henselae। এই ব্যাকটেরিয়া বিড়ালের কামড়, আঁচড় এমনকি বিড়ালের লালার মাধ্যমেও মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। শরীরে প্রবেশ করার পর এটি রক্তে মিশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার ফলে “Cat Scratch Disease” বা “ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজিজ” নামক সংক্রমণ হতে পারে।

এই রোগের উপসর্গগুলো বেশ উদ্বেগজনক। যথা - 

• আঁচড়ের জায়গায় লালচে ফোলাভাব ও চুলকানি

• আক্রান্ত স্থানে পুঁজ বা ঘা তৈরি হওয়া

• কাছাকাছি লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া

• জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়া

• গুরুতর ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়লে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে

এই ধরনের সংক্রমণ যেভাবে প্রতিরোধ করবেন- 

বিড়ালের সঙ্গে দৈনন্দিন মেলামেশার সময় কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। 

১. সতর্ক হয়ে আদর করুন:

বিড়ালের সঙ্গে খেলার সময় সাবধান থাকুন। নখে আঁচড় যাতে না লাগে, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। পোষা বিড়ালের নখ নিয়মিত ছাঁটুন।

২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: 

বিড়ালকে ছোঁয়ার পর বা আদর করার পর অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রয়োজনে হাত স্যানিটাইজ করুন।

৩. পোষা প্রাণীর টিকা নিশ্চিত করুন: 

বিড়ালকে নিয়মিত টিকা দিন। এতে তাদের শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যায়। তবে টিকা থাকলেও আঁচড় পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

৪. প্রাথমিক চিকিৎসা নিন: 

আঁচড় লাগলে প্রথমেই আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে অ্যান্টিসেপ্টিক লাগান। এরপর যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।

৫. গভীর ক্ষত হলে গুরুত্ব দিন: 

রক্তপাত হলে গজ বা ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে টিটেনাস ইনজেকশন নিন।  যদি ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয় অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন।

পোষা প্রাণীর ভালোবাসা যেমন নিঃস্বার্থ তেমনই তাদের থেকে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণও হতে পারে প্রাণঘাতী। তাই সচেতন থাকুন, পোষা প্রাণীর যত্ন নিন এবং নিজের সুরক্ষাও নিশ্চিত করুন। বিড়ালের আঁচড়কে হালকাভাবে না দেখে প্রয়োজনে চিকিৎসা নিতে দ্বিধা করবেন না।

এসকে// 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #পোষা প্রাণী