লাইফস্টাইল

বিনোদনের আড়ালে বিপদ ছায়া শিশুদের কার্টুন আসক্তি

লাইফস্টাইল ডেস্ক

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামছে। পাশের ফ্ল্যাটের বারান্দা দিয়ে ভেসে আসছে হাসি-চিৎকারের শব্দ। কিন্তু খেয়াল করলে বোঝা যায় সেটা খেলাধুলার নয়, কার্টুন চরিত্রদের সংলাপ।  এ প্রজন্মের অনেক শিশুই মাঠে ছুটোছুটি নয় বরং, টেলিভিশন কিংবা মোবাইলের পর্দায় কাটাচ্ছে শৈশব।

আশপাশের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায়, বেশিরভাগ শিশুর দিন শুরু আর শেষ হয় প্রিয় কার্টুন দেখে। খাওয়ার সময়, পড়াশোনার ফাঁক, এমনকি ঘুমানোর আগে পর্যন্ত পর্দার সঙ্গেই তাদের বন্ধুত্ব। এতে আনন্দ থাকলেও থেকে যায় এক ধরনের অদৃশ্য চাপ।

কেউ কেউ লক্ষ্য করেছেন, শিশুরা এখন সহজেই রেগে যায় বা জেদ করে বসে। আবার অনেক সময় কার্টুন চরিত্রের আচরণ নকল করতে গিয়ে বাস্তব জীবনের সঙ্গে মিল খুঁজে পায় না। 

শিক্ষকরা বলেন, ক্লাসে মনোযোগ কমে যাওয়া কিংবা সহজে পড়া মুখস্থ না হওয়ার পেছনেও এর প্রভাব রয়েছে। চিকিৎসকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন চোখের সমস্যার কথা। দীর্ঘক্ষণ টিভি বা মোবাইলের সামনে বসে থাকার ফলে অনেক শিশুর চোখ শুকিয়ে যাচ্ছে, ঝাপসা দেখছে। শুধু তাই নয়, শরীরচর্চার অভাবে ওজন বাড়ছে। এমনকি রাতে ঘুমও ভাঙছে বারবার।

মজার ব্যাপার হলো, যে সময়টা আগে পাড়ার মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা বা গল্পগুজবে কাটতো। এখন তা দখল করছে স্ক্রিন। ফলে বন্ধুত্ব কিংবা পারিবারিক বন্ধন আগের মতো উষ্ণ থাকছে না। অনেকেই আবার মাতৃভাষায় ঠিকভাবে কথা বলতে পারছে না কারণ সারাদিন ভিনদেশি সংলাপই শুনছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কার্টুন একেবারে ক্ষতিকর নয়।  বরং, বেছে নেওয়া শিক্ষামূলক কার্টুন শিশুর কল্পনা ও জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে পারে। মূল সমস্যা হয় নিয়ন্ত্রণহীনতায়। অভিভাবক যদি প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেন, মানসম্মত কনটেন্ট দেখান এবং একই সঙ্গে খেলাধুলা, বই পড়া বা আঁকাআঁকির সুযোগ করে দেন তাহলে শিশুরা ভারসাম্যপূর্ণভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

রঙিন কার্টুনের দুনিয়া শিশুদের আনন্দ দেয়, কল্পনা জাগায়। কিন্তু যখন আনন্দটা আসক্তিতে রূপ নেয়, তখনই শুরু হয় সমস্যা। আর সেই সীমারেখা টানার দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত বাবা-মায়েরই।

এসকে// 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন #শিশু #কার্টুন