আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আমার নামে অপবাদ দেয়া হচ্ছে, লাইভে মামুনুল হক

আমার নামে অপবাদ দেয়া হচ্ছে, লাইভে মামুনুল হক

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে ‘দ্বিতীয় স্ত্রীসহ’ অবরুদ্ধ হওয়া, কয়েকটি অডিও কল ফাঁস, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলের ভিডিও বক্তব্য এবং সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আবারও ফেসবুক লাইভে এসেছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই হেফাজতে ইসলামকে দুর্বল করার জন্যই এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ৩টার সময় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, দেশে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরী করার পেছনে ব্যক্তি মামুনুল হক মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ইসলামের পক্ষে কণ্ঠগুলো স্তব্ধ করে দেওয়া, ইসলামপন্থাকে বাংলাদেশে দুর্বল করে দেওয়া।

তিনি বলেন, যেভাবে একের পর এক মানুষের ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না। আমার নামে অপবাদ দেয়া হচ্ছে। মাওলানা রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে তার নামেও অপবাদ দেয়া হচ্ছে। এই যে এতগুলো ফোনালাপ ফাঁস করা হলো তাতে কি প্রমাণ মিলেছে যে, সে আমার বিবাহিতা স্ত্রী নয়? অথচ শুধু শুধু আমার একান্ত ব্যক্তিগত কথাগুলো কোন উদ্দেশ্যে ফাঁস করা হলো?

মামুনুল বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে বলবো, আগুন নিয়ে বেশিদিন খেলা করবেন না। এর পরিণতি ভালো হবে না। রাষ্ট্রযন্ত্র, প্রশাসন যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, এর মূল উদ্দেশ্যই হলো ইসলামের পক্ষে আমার সোচ্চার কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেওয়া। আমার মনে হচ্ছে, এরপরে হেফাজতে ইসলামের দায়িত্বশীলদের পারষ্পরিক আলাপচারিতার গোপন রেকর্ড ফাঁস করার যে ধারাবাহিক সিরিজ শুরু হয়েছে, এর মাধ্যমেও তাদের উদ্দেশ্য দেশবাসীর সামনে স্পষ্ট হয়েছে। তারা চাচ্ছে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বকে কলুষিত করতে, অন্তর্দ্বন্দ্ব ও কলহ তৈরী করতে।

শিশু বক্তা মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একইভাবে তাঁর চরিত্রের উপরও কালিমালেপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চরিত্র হননের যে অশুভ খেলা শুরু হয়েছে, সেটা যদি চলতে থাকে তাহলে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা কী চিন্তা করেছেন? ইতোমধ্যেই কী দেখছেন না কতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কতো ব্যক্তিগত বিষয় জনসমক্ষে এসে পড়ছে। এটা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা, স্থিতিশীল পরিবেশকে, সভ্য সমাজের ভদ্রতাকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করবে।

তিনি বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, কাঁচের ঘরে থেকে অন্যকে ঢিল ছোড়ার মতো বিপজ্জনক প্রক্রিয়া কেউ অবলম্বন করবেন না।

রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি আশা করিনি যে, বাংলাদেশ এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে গেছে, সন্ত্রাসীরা এমন একটি নিরাপদ জায়গাতেও এভাবে হামলা করতে পারে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তাদের যদি কোনো যাচাই বাছাইয়ে বিষয় থাকতো, তারা আমার অনুমতি নিয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য যদি ৩ জন থাকে, সরকার দলীয় ক্যাডার ছিলো ৩০ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সরকার দলীয় ক্যাডারদের নিয়ে কেন আমার উপর চড়াও হলো, কেন আমাকে হেনস্তা করলো? আমি যদি রুখে না দাঁড়াতাম, তবে আমি নিশ্চিত তারা আমাকে আরো ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিতো। তারা আমার পোশাকের উপর, দাড়ির উপর পর্যন্ত হামলা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।

মামুনুল হক বলেন, জান্নাত আরা ঝর্ণার কাছ থেকে আমার অনুমতি ছাড়া যে বক্তব্য তারা ধারণ করেছেন, কার অনুমতি নিয়ে তারা সেটা জনসমক্ষে প্রচার করেছে। আমার পর্দানশীন স্ত্রীর পর্দা তারা লঙ্ঘন করেছে। এর জন্য আমি জনতার আদালতে বিচার দাবি করলাম। আইনানুগভাবেও বিচার চাইবো। এতো এতো ফোনালাপ যে আপনারা ফাঁস করলেন, প্রমাণ কি করতে পারলেন জান্নাত আরা ঝর্ণা আমার স্ত্রী নয়?

লাইভে মাওলানা মামুনুল হক দাবি করেন, র‍য়্যাল রিসোর্ট-এ তাঁর সংগে থাকা নারীর ছেলে আব্দুর রহমানকে জোর করে ভিডিও বার্তা দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো। লিখে দেওয়া স্ক্রিপ্ট তাঁকে ক্যামেরার সামনে বসে পড়তে বলা হয়। 

শুভ মাহফুজ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন আমার | নামে | অপবাদ | দেয়া | হচ্ছে | লাইভে | মামুনুল | হক