বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত মনের অসুখ ভালো করার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়ায় মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছিলো তার। ফলে তার চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যায় মুম্বাই পুলিশের কাছে দেয়া বয়ানে সুশান্তের দু’জন মনোচিকিৎসক জানান।
তারা সুশান্তের মৃত্যুর কিছু দিন আগেও অভিনেতার চিকিৎসা করেছেন। সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তী অভিনেতার চিকিৎসার ব্যাপারে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা অন্য একটি গণমাধ্যমের সূত্র দিয়ে জানায়, একজন মনোচিকিৎসক পুলিশকে সুশান্তের ব্যাপারে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অভিনেতার সঙ্গে তার কথা হয়েছে গেল ৮ জুন। রিয়া যে দিন অভিনেতার ফ্ল্যাট থেকে চলে গিয়েছিলেন এবং সুশান্তের বোন মিতু সিং তার সঙ্গে থাকার জন্য ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। রিয়া সেদিন তাকে হোয়াটসঅ্যাপে জানান, সুশান্তের মানসিক অবস্থা অনেক খারাপ হয়েছে। আবার যদি ওষুধ চালু করা যায়, সেজন্যও বলেছিলেন রিয়া।
এটা শুনে ওই চিকিৎসক হোয়াটসঅ্যাপে প্রেসক্রিপশন লিখে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সুশান্ত তার সঙ্গে কথা বলতে চান। সেই মতো রিয়ার ফোন থেকে ভিডিও কল করেন তিনি।
এ ব্যাপারে চিকিৎসক বলেছেন, সুশান্তকে যখন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি ওষুধ খাচ্ছেন না কেন, উনি কোনো কথা না বলে শুধু হেসেছিলেন। আমি সুশান্তকে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিই। রিয়াকে বলি, বিষয়টির দিকে তিনি যেন নজর রাখেন। রিয়া আমাকে জানায়, সুশান্ত তার কথা শোনেন না, ফলে তার পক্ষে কী করার আছে? আমি ফি চাইলে রিয়া আমাকে জানান, তিনি ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সুশান্তের বোনই পরবর্তী সিদ্ধান্তগুলো নেবেন।
ওই চিকিৎসক জানান, ৬ দিন পরে টেলিভিশনে সুশান্তের মৃত্যুর খবর দেখতে পাই।
সুশান্ত গভীর দুশ্চিন্তা, মানসিক অবসাদের ভেতরে ছিলেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে প্রথমবার সুশান্তের চিকিৎসা করেছিলেন তিনি। সেসময়ে অভিনেতার ঘুম হচ্ছিলো না, খেতে ইচ্ছা করত না, জীবনে কোনো কিছুই ভালো লাগত না তার। সব সময়ে ভীত ছিলেন তিনি, বেঁচে থাকার ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলেছিলেন। বলছিলেন ওই চিকিৎসক।
আরেকজন চিকিৎসক পুলিশকে জানায়, বাইপোলার ডিসঅর্ডার-এ ভুগছিলেন অভিনেতা। গত নভেম্বর মাসে রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন সুশান্ত। রিয়াকে তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, সুশান্তের ভেতরে আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে কিনা, অভিনেত্রী বলেছিলেন, হ্যাঁ। সুশান্ত চাইছিলেন, দ্রুত কেউ তাকে সুস্থ করে দিক। তা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। কোনো কারণ ছাড়াই বিষন্ন থাকতেন সুশান্ত।
