জন্ম, বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে। পড়াশোনা ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে। এখন মার্কিন ডাক্তার-উদ্যোক্তা। মনোনয়ন পেয়েছেন ২০২৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য। আশা দেখাচ্ছেন কোভিডে আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসার ব্যয় হাতের নাগালে নিয়ে আসার।
তিনি হলেন বাংলাদেশি আমেরিকান ড. রায়ান সাদী।
সারাবিশ্বে কোটি কোটি ক্যান্সার রোগীসহ নানা ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তদের নিরাময়ে বিশেষ একটি চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কার করেছে ড. রায়ান সাদীর মালিকানাধীন ‘টেভোজেন বায়ো’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান।
নিউজার্সিতে অবস্থানরত ‘টেভোজেন বায়ো’র এই সাফল্যের সংবাদ জানার পরই একই স্টেটের ‘এইচএমপি’ নামক বিখ্যাত আরেকটি সংস্থা এগিয়ে এসেছে আবিষ্কৃত টি-সেল এবং জিন থেরাপির উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে। এইচএমপি রীতিমত পার্টনার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হবার সঙ্গে সঙ্গে ড. রায়ানের মালিকানাধীন ‘টেভোজেন’র মূল্য দাঁড়িয়েছে ৪.২৫ বিলিয়ন ডলারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
মার্কিন মুল্লুকের চিকিৎসা-আবিষ্কার-বাণিজ্য নিয়ে কর্মরত গণমাধ্যমে ১৬ মার্চ এ সংবাদ ফলাও করে প্রচার ও প্রকাশ পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পাবনার সন্তান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করার পর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা-বিজ্ঞানে লিডারশিপ এবং ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে হেলথ পলিসি এবং অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণকারি ড. রায়ান সাদী।
তিনি বলেন, এটি মানবতার কল্যাণে বিস্ময়কর একটি অধ্যায় ছিল। এটাকে এক ধরণের ম্যাজিক হিসেবেও ভাবতে পারেন। কারণ, ক্যান্সারের মত জটিল রোগ সারাতে আমাদের এ পদ্ধতিতে কোন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হবে না। এমনকি, অন্য চিকিৎসা-ব্যবস্থার মত আক্রান্ত রোগীর শরীরের সুস্থ সেলগুলোকেও মারতে হবে না। এই পন্থায় শুধুমাত্র ভাইরাসে আক্রান্ত সেলগুলোই ধ্বংস হয়ে যাবে। অন্য সুস্থ সেলগুলোর কোন ক্ষতি হবে না।
ড. রায়ান উল্লেখ করেন, ক’বছর থেকেই চালাচ্ছিলাম এই গবেষণা। তারই মধ্যে করোনার প্রকোপ চরমে উঠায় একই গবেষণায় করোনার চিকিৎসাকেও যুক্ত করেছিলাম। সেটিও বহাল রয়েছে।
টেভোজেনের সিইও এবং চেয়ারম্যান ড. রায়ান অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আরো বলেন, জীবন বিজ্ঞান বিনিয়োগ সংস্থা ‘এইচএমপি পার্টনার’ এগিয়ে আসায় আমাদের উদ্দেশ্য দ্রুত সফল হবে বলে মনে করছি।
এইচএমপি পার্টনারের ম্যানেজিং ডিরেক্টরর হেমা পাটেল উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৮ মাসের গবেষণায় টেভোজেনের বিজ্ঞানীগণের টিম ওয়ার্ক সফল হলো এবং আশা করছি রোগীরাও শীঘ্রই এর সুফল পাবেন।
কয়েক মাস আগেও বাংলাদেশিরা ডা. সাদীর সম্পর্কে তেমন কিছু জানত না। তার বন্ধু শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ডা. সাদী ও টেভোজেন বায়ো স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য দূরীকরণের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। এরপরই ছড়িয়ে পড়ে তার নাম।
উল্লেখ্য, টেভোজেনের পরবর্তি প্রজন্মের নির্ভূল টি সেল প্ল্যাটফর্মটি ম্যালিগন্যান্ট এবং ভাইরালে সংক্রমিত কোষগুলিকে নির্মূল করার লক্ষ্যে এই ডিজাইন করা হয়েছে-যা হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফলপ্রসূ হবে।